আদ্রিকা গতকালই আমার সাথে ছবিও তুললো,চানাচুরও খেলো: সেই ধ’-র্ষি-‘তা সম্পর্কে উমমা ফাতেমা

জুলাই আন্দোলন চলাকালীন গত ৪ আগস্ট ছা ত্র লী গের হাতে ধ-‘র্ষ-‘ ণের শিকার হয়ে অন্তস্বত্বা হয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন বেসরকারি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী অদৃতা মাহি।

আন্দোলনের সমন্বয়কসহ অন্যদের বিষয়টি জানালেও কাউকে পাশে না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন তিনি।

আজ শনিবার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সম্মুখ ভূমিকা’ নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ দাবি করেন তিনি।

আর এরপরেই এ নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন, সমন্বয়করা , এ ব্যাপারে নাগরিক কমিটির উমামা ফাতেমা দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তাজাখবরের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো

আজকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রাম একজন ছাত্রী আমার, নুসরাতসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করে। এ বিষয়ে অবগত হয়ে আমি নিজের হোয়াটসএপে তার সাথে চ্যাটগুলো চেক করি। নুসরাত, রিমি আপুর সাথে কথা বলে সার্বিক বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করি। ইতোমধ্যে নুসরাত, মম তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। আমি ঐ ছাত্রীর ঘটনা সত্য না মিথ্যা সে আলাপে যাব না, এমনকি নিজের আত্মপক্ষও সমর্থন করব না। কিছু বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরি-

গত অক্টোবর মাসে এ উক্ত ছাত্রীটির সাথে আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে পরিচয় হয়। তার কয়েকদিন পর সে আমাকে whatsapp এ টেক্সট দিয়ে বলল আমার সাথে সে কিছু আলাপ করতে চায়। এরপর জানায় ৪ আগস্টে তাকে নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণ করা হয়েছে। আমি তার কথা গুরুত্বের সাথে নিই এবং তাকে মামলা করতে বলি, মামলার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে চাই। কিন্তু সে জানায় যারা ধর্ষণ করেছে তাদের চেহারা সে ভুলে গেছে এবং সে মামলা করতে চায় না। আমি এরপর নারায়ণগঞ্জে পরিচিত একজন সমন্বয়কের নাম্বার দিয়ে যোগাযোগ করতে বলি এবং জানাই আমি সমন্বয়কদের সাথে কথা বলে দিব। কারণ যেকোনো স্থানীয় সমস্যা ডিল করার ক্ষেত্রে নিজে আগ বাড়িয়ে কথা না বলে স্থানীয় যারা সমন্বয়ক বা দায়িত্বশীল আছেন তাদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া চেষ্টা করি কারণ বিষয়টার সত্য-মিথ্যা যাচাই করে আমাদের স্টেপ নিতে হবে। কিন্তু সাথে সাথে যে রিপ্লাই দেয় ঐ সমন্বয়কের সাথে তার যোগাযোগ আছে আগে থেকে, সমন্বয়ক উনি ঘটনা জানার পরও কোনো স্টেপ নেননি। আমি তারপর আরেকজনের নাম্বার দিয়ে সেইমভাবে বলি আপনি যোগাযোগ করেন, উনি বিষয়টা সেনসেটিভলি দেখবে। কিন্তু সে একইভাবে জবাব দেয় উক্ত সমন্বয়কও সব জানে এবং সে কোনো হেল্প করেনি। আমি তখন একটু অবাক হই। তারপর ছাত্রীটি আমাকে জানায় মানুষ তাকে বুঝল না, তাকে শিবির ট্যাগ দেয়া হয়েছে, দালাল ট্যাগ দেয়া হয়েছে। তাই সে না.গঞ্জ ছেড়ে সেন্ট্রালে চলে আসছে। আমি যাতে তাকে সেন্ট্রালের কাজে রাখি। এই কথাটা আমি ঠিক প্রসেস করতে পারিনি। সে ধর্ষণের মতো একটা ইস্যু থেকে সেন্ট্রালের পদ নিয়ে আলাপ শুরু করল কেন?!

(Screenshot নিচে)

এখন আমার প্রশ্ন আমরা মেয়েটাকে কি সাহায্য করতে পারতাম?-

১) আইনি সাহায্য

২) সামাজিকভাবে পাশে দাঁড়ানো

৩) মানসিক সাহায্য ও মেডিকেল ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন হলে সাহায্য করা।

এই সকল সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও মেয়েটি আমাদের সাহায্য নেয়নি। এবং আমার সাথে তার আলাপ কয়েকটা টেক্সট আদান-প্রদান পর্যন্তই। আমাদের অন্যান্য সমন্বয়কদের প্রায় প্রত্যেকের সাথে তার এ বিষয়ে কথা হয়েছে। ঐ ম্যাসেজের পরে অনেকদিন তার সাথে সরাসরি আমার দেখা হয়েছে। সে আমাকে কিছুই জানায়নি, হেসে কথা বলেছে। আমার যেহেতু ওর কাছ থেকে শোনা ঘটনাটা ঠিক বিশ্বাসযোগ্য ঠেকছিল না তাই সময়ের সাথে আমি ছাত্রীটির সাথে হওয়া আমার কনভারসেশন ভুলে যাই।

অদ্ভুত ব্যাপারটা হচ্ছে মেয়েটির সাথে আমার শহীদ মিনারে ২১ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে ফুল দেয়ার সময় দেখা হয়, সে যেচে আমার সাথে ছবিও তুলল

(ছবি নিচে), আমার সাথে নিচে চানাচুর খেল, কথা বলল, কিন্তু একটাবার সে ধর্ষণের ঘটনাটি উল্লেখ করেনি। তার একদিন পর আজকে ২২ ফেব্রুয়ারিতে সে একটি পাবলিক প্রোগ্রামে আমাদের দায়ী করে বক্তব্য দিল!

সর্বশেষ, জুলাই আন্দোলনের পরে পাবলিক ডিলিংসের ক্ষেত্রে আমাদের না চাইলেও সতর্ক থাকতে হয়। কারণ, আমাদের কাছে যখন মানুষ কথা বলতে আসে তখন অনেকের ভালো উদ্দেশ্য থাকে, আবার অনেকের খারাপ উদ্দেশ্য থাকে। আমরা ফলস কেইস এড়াতে স্থানীয় পর্যায়ের ইস্যুগুলো স্থানীয় সমন্বয়কদের কাছে আগে পাঠাই। জুলাই মাস থেকে বহু মানুষ ডিল করার অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমার কাছে মেয়েটার কথা শুনে খটকা লেগেছিল। এই খটকার লাগার জন্য আমি তাকে ম্যাসেজে রেসপন্স করার ক্ষেত্রে পরবর্তীতে সাবধানতা অবলম্বন করি। আমার প্রথম থেকে যে বিষয়গুলো চোখে পড়েছে তা আপনাদের জানিয়ে রাখলাম।

যদি আমার এই কাজটির জন্য আমি দোষী হই সেটা আপনাদের সিদ্ধান্ত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *