জুলাই আন্দোলন চলাকালীন গত ৪ আগস্ট ছা ত্র লী গের হাতে ধ-‘র্ষ-‘ ণের শিকার হয়ে অন্তস্বত্বা হয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন বেসরকারি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী অদৃতা মাহি।
আন্দোলনের সমন্বয়কসহ অন্যদের বিষয়টি জানালেও কাউকে পাশে না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন তিনি।
আজ শনিবার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সম্মুখ ভূমিকা’ নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ দাবি করেন তিনি।
আর এরপরেই এ নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন, সমন্বয়করা , এ ব্যাপারে সমন্বয়ক নুসরাত তাবাস্মুম দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তাজাখবরের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো
নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে Abdul Hannan Masud আমাকে জানায় নারায়ণগঞ্জের একটা মেয়ে খুব সেন্সিটিভ একটা বিপদে পড়েছে, আমি যেন যোগাযোগ করি।
তারপর আদৃতা মাহির সাথে আমার কথা হয় টিএসসিতে।
সে আমাকে জানায় সে ৪ আগস্ট ধর্ষণের শিকার হয়েছে স্থানীয় ছাত্রলীগের হাতে। আবার ১০ তারিখেই তার সাথে একই ঘটনা ঘটে!
আমি তার কাহিনি শুনে খুবই আতঙ্কিত হয়ে যাই। বিশেষত ১০ তারিখের কথা শুনে। মাহি এটাও জানায় যে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার নাম বলে সে ছাড়া পেয়েছে।
সব মিলিয়ে ঘটনাটা খুবই ভীতিকর ছিল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি সে কাউকে চিনতে পেরেছে কি না?
প্রথমে সে বলে কাউকেই চিনতে পারে নি।
পরে জিজ্ঞেস করি তারা ছাত্রলীগ এটা বুঝল কি করে? (আমি বুঝতে চেষ্টা করছিলাম কোন বড় নেতা বা কিছু আছে কি না)
তখন সে বলে একজনের চেহারা চিনতে পেরেছে।
আমি মাহিকে বলি দ্রুত মামলা করতে, আর জিডির কাগজপত্র দিতে (আমি ভেবেছিলাম মাহি জিডি করেছে কিন্তু কোন রেসপন্স পায় নি)। মাহি জানায় সে জিডি করে নি। আমি তাকে মামলা করতে বলি, এটাও বলি যে মামলার যাবতীয় দায়দায়িত্ব, খরচ, ভবিষ্যতে আদালতের ছোটাছুটি, ওকালতি সাহায্য সবই প্রোভাইড করা হবে। সে জানায় সে মামলা করতে চাচ্ছে না।
আমি ভাবি সে হয়তো ভয়ভীতির কারণে এমন করছে। আমি তাকে বলি পুরো ডিটেইলস দিতে যেন বৈষম্য বিরোধীর পক্ষ থেকে মামলা করা যায়, প্রয়োজনবোধে আমি নিজে বাদী হবো। নারায়ণগঞ্জের এসপির সাথে যোগাযোগ করব দরকার হলে সেটাও বলি। মাহি সেই প্রস্তাবও নাকচ করে।
তারপর সে জানায় সে কনসিভ করেছে!! এই ঘটনায় আমি প্রায় আকাশ থেকে পড়েছিলাম কারণ ৪ মাস এটা গোপন করা চরম বোকামি!!
মাহি জানায় সে এবরশান করতে চায়। আমি তাকে বলি ৪ মাসের প্রেগন্যান্সিতে এবরশান খুবই বিপজ্জনক। আর এবরশানের মত একটা সেন্সিটিভ কাজ কোথায় কোন হাসপাতালে করায় বা কোন ডাক্তার ভালো এক্ষেত্রে আমার তো জানা নেই তাই আমি আসলে এ বিষয়ে সরাসরি কিছু করতে পারব না (তার এই চাওয়াতেই আমি সরাসরি অপারগতা জানিয়েছিলাম)।
কিন্তু সবার আগে দরকার ভালো করে তার ডাক্তারি সকল টেস্ট করিয়ে শরীরের অবস্থা বোঝা। সেক্ষেত্রে আমি সাহায্য করতে পারি।
আমি তাকে ইবনে সিনায় যাওয়ার পরামর্শ দিই (আমি ইবনে সিনায় বেশ কয়েকবার চিকিৎসা করিয়েছি, পরিচিত সেই জন্য বলেছিলাম)। সব ধরনের সাপোর্ট দেয়ার কথা বলি।
কিন্তু মাহি বলে তার পরিবারের সাথে এখন সম্পর্ক খুবই খারাপ, তার দ্রুতই এটা থেকে ক্লিন হতে হবে।
আমি বলি তার পরিবারে আমরা কথা বলব, বোঝাব। কিন্তু মাহি তাতেও রাজি হয় না।
সে জানায় তার ঢাকায় থাকার জায়গা লাগবে, সে খুবই অসুবিধায় আছে। আমি নিজেই হলে থাকি তাই বাধ্য হয়ে তাকে আমার বলতে হয় যে আমি আমার সিনিয়র আপুদের জানিয়ে দেখি কি করা যায়।
সেদিন আলাপে মাহি আমাকে বলে সে এ বিষয়ে সার্জিস আলম ভাইকে জানিয়েছে।
আমি “সার্জিস ভাইয়ের সাথে কথা বলে আপডেট নিব আর আপুর সাথে কথা বলে থাকার জায়গা পাই কি না দেখব” বলি।
আর জিজ্ঞেস করি সে কবে হাসপাতালে যেতে চায় যেন জানায়।
এরপরপরই তার সাথে আরও একবার দেখা হয়, সেদিন Md Sarjis Alam ভাইও ওদিক দিয়েই যাচ্ছিলেন। আমার সামনেই ভাই তাকে পপুলার হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বলেন। আর আইনি যতরকম সাহায্য করা যায়, করতে চান বলে জানান।
পরে ভাই চলে গেলে মাহি আমাকে বলে সে আমাকে ম্যাসেজ দিয়েছিল। আমি তাকে জানাই আমি পারিবারিক দুর্ঘটনার কারণে বাড়ি গিয়েছিলাম (কাকীর কবর জিয়ারত) তাই দেখতে পাইনি।
মাহি জানায় নারায়ণগঞ্জে সে কাজ করতে চায় না। সে বৈষম্য বিরোধীর কেন্দ্রে কাজ করতে চায়। আমি তাকে বলি এখনো তো কেন্দ্রীয় কোন কমিটিই হয় নি। মাহি বলে সে নারায়ণগঞ্জে কাজ করবে না। সেখানে নানা রকম অসুবিধায় পড়ছে।
কোন একটা ছেলের কথা বলে যে নাকি তার রেপের ঘটনা নিয়ে তাকে টিজ করছে। এটা নিয়ে সে কিছু স্ক্রিনশটও দিয়েছিল। কিন্তু আমার গ্রামে ইন্টারনেট ব্যবস্থা খুবই খারাপ তাই সেগুলো ডাউনলোড হয় নি।
আমি তাকে আবারও মামলায় যেতে বলি কিন্তু এবারও মাহি না করে দেয়।
মাহির সাথে আমার এ পর্যন্তই কথা।
মাহির সাথে তার বক্তব্য অনুযায়ী যেই অত্যাচার হয়েছে সেটা অত্যন্ত বিভৎস। তার প্রতি সম্পূর্ণ সহানুভূতি রেখেই তার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানো হয়েছে।
কিন্তু তাকে সাহায্য করতে চাওয়া হয় নি এটা সর্বাংশে ভুল!! আদৃতা মাহিকে বার বার আইনি সহায়তার প্রস্তাব দেয়ার পরও সে নাকচ করেছে। হয়তো মিডিয়া ট্রায়াল কিংবা অন্য কোন ভয়ের জন্য। আমি জানি না।
কিন্তু আদৃতাকে আমি জিজ্ঞেস করতে চাই, তোমার জন্য সুবিচার কোন টা হতো ছোট আপু? যে কেন্দ্রীয় কমিটি হয়ই নি সেটাতে একটা পোস্ট দিলে? নাকি ঢাবির হলে একটা সিট( Samia Masud Momo আমার হলের জুনিয়র, সে আমাকে জানিয়েছিল তুমি ওর কাছে এটা বলেছ)? নাকি তোমার অপরাধীদের শাস্তি??
তুমি আমাকে দ্বিতীয় বার ব্যথিত করলে মাহি। প্রথমবার আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে না চেয়ে, দ্বিতীয়বার আল্লাহই জানে, তুমি কি করে ভুলে গেলে কিন্তু ভুল অভিযোগ এনে!!!