গণহত্যার দায় নিয়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভিন্ন গুজব এবং প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে আসছে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম। সম্প্রতি, আমেরিকার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএইড)-এর সাহায্য বন্ধ হওয়া নিয়ে বাংলাদেশকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করেছে ভারতের বাংলা গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।
এবার তারা “বাংলাদেশকে অনুদান দেওয়া বন্ধ করে দিল আমেরিকা! নতুন চাপে মুহাম্মদ ইউনূস সরকার” শিরোনামে একটি বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনের প্রথমাংশে বলা হয়েছে, “বিপাকে বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইউএসএইড থেকে যে সাহায্য এতদিন পেত বাংলাদেশ, তা এবার বন্ধ হলো। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেশ কিছু নির্বাহী আদেশের জেরে বাংলাদেশের সঙ্গে ইউএসএইড-এর আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ করা হয়েছে।”
তবে ভারতেরই ইংরেজি গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন সারা বিশ্বের জন্যই আপাতত এই সাহায্য বন্ধ রেখেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মিশর ও ইসরায়েল ছাড়া অন্যান্য সব দেশের জন্যই ইউএসএইড-এর অনুদান স্থগিত রাখা হয়েছে। যদিও জরুরি খাদ্য সহায়তার প্রকল্পগুলো চালু থাকবে।
বিবিসি, সিএনএনসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সহায়তা প্রদান স্থগিতের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও একটি গোপন নথিতে জানিয়েছেন, বিদ্যমান এবং নতুন সহায়তার বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে এবং অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত নতুন অর্থ ছাড় হবে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের “আমেরিকাই প্রথম” নীতির অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে ৮৫ দিনের মধ্যে এই বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, “ইউএসএইড বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ৯০ দিনের জন্য কার্যক্রম স্থগিত করেছে। তবে তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রকল্পের অর্থায়ন অব্যাহত থাকবে।”
রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য অব্যাহত রাখার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, এমনটাই জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব।