গণতন্ত্রের চেতনাকে সমুন্নত রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথটা কিছুটা তৈরী করতে পারাটাই এখন আমাদের জন্য যথেষ্ট হওয়া উচিত

আমরা তা পছন্দ করি বা না করি, আমাদের মনে রাখতে হবে যে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের একটি শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে – আর এটাই বাস্তবতা। বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী রয়েছে এবং তারা ভারত থেকে তাদের নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য তাদের অবস্থান থেকে যথাসাধ্য করে যাচ্ছে। ড মুহম্মদ ইউনূস, তিনি যতটা গুণী বাক্তিত্তই হোন না কেন, তিনি এবং তার উপদেষ্টাদের দল এই কুটচালের নৈরাজ্যকে বারবার নস্যাৎ করার জন্য যে জাতীয় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা করতে কতটা সক্ষম তা নিয়ে আছে যথেষ্ট সন্দেহ। বিশেষ করে তারা কেউই রাজনীতিবিদ নন , তাদের কারোরই আওয়ামী লীগের রাজপথে নৈরাজ্যের রাজনীতিকে মোকাবেলা করার অভিজ্ঞতা নেই। এখন প্রশ্ন হলো, আমরা কি এই স্থায়ী অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে চাই? এই ধারাবাহিক অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তা আমাদের দেশের বড় ক্ষতি করছে এবং এই অবস্থা চলতে থাকলে তা থেকে পুনরুদ্ধার হতে আমাদের অনেক বছর লেগে যাবে। আমরা এইভাবে যত বেশি সময় থাকব, আমাদের পুনরুদ্ধার করা তত কঠিন হবে। বিশেষ করে, হাসিনা যেভাবে তার সহযোগীদের বলে বেড়াচ্ছেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হলেই বাংলাদেশে তার ফেরত আসার পথ সুগম হবে, তাই আমাদের চিন্তা করতে হবে আমরা কি হাসিনাকে সেই সুযোগ দিতে চাই কিনা?

তাই, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি সংস্কারের মোহ থেকে বেরিয়ে বাস্তবতা মেনে নিয়ে এগিয়ে আসে তবে সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে বলেই মনে হয়। এখন পর্যন্ত গঠিত টাস্ক ফোর্স, কমিটি এবং কমিশনগুলি এমন কোনো আস্থার জাগায় তৈরী করতে পারেনি যা দেখে মনে হতে পারে যে তারা উল্লেখযোগ্য কিছু অর্জন করতে সক্ষম হবে। তাই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ঠিক যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন তা করে যততাড়াতাড়ি সম্ভব একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করাটাই মনে হয় শ্রেয়। যাতে একটি গণমানুষের নির্যাচিত সরকার প্রয়োজনীয় বাকি সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে এই অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তা থেকে উদ্ধার করতে পারে। তর্কের খাতিরে অথবা আবেগতাড়িত হয়ে আমরা গণতন্ত্র বা সংস্কার নিয়ে অনেক বড়বড় কথা বলতে পারি বা স্বপ্ন দেখতে পারি, কিন্তু তা হতে হবে বাস্তবতার নিরিখে। আমাদের হৃদয় ও মনে গণতন্ত্রের চেতনাকে সমুন্নত রাখা এবং সেই চেতনাকে ধারণ করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথটা কিছুটা তৈরী করতে পারাটাই এখন আমাদের জন্য যথেষ্ট হওয়া উচিত।

জুলকারনাইন সায়ের খান (সামি) ফেসবুক পোস্ট থেকে অনুবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *