ছাত্রদের রাজনৈতিক দল : নতুন দুই পদ তৈরী করে আপাতত সমাধানের চেষ্টা

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে নতুন যে রাজনৈতিক দল আসতে যাচ্ছে, তা শুরুতেই খেয়েছে হোঁচট। মূলত বিভিন্ন পদ পাওয়া নিয়ে শুরু হয় কোন্দল। নতুন দলের আহ্বায়কের পদে নাহিদ ইসলামের নামটা মোটামুটি ঠিক থাকলেও দলের দ্বিতীয় পদ সদস্যসচিব পদ নিয়ে শুরু হয় ঝামেলা। এই পদ নিয়ে বহু ধারায় বিভক্ত হয়ে পরে দোল গঠনের সাথে জড়িত নেতা কর্মীরা। এর মধ্যে তিনটি অংশ স্পষ্ট—১. গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক নেতা; ২. ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা ও ৩. বামধারার বিভিন্ন সংগঠনের সাবেক নেতা ও মধ্যপন্থী নেতারা।

জানা গেছে , চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে শিবিরের সাবেক নেতাদের মধ্যে একজন আখতার হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন। শীর্ষ চারটি পদে তাঁদের কাউকে না রাখলে নতুন দলে তাঁরা থাকবেন না বলে জানান। মূলত এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিবিরের সাবেক নেতারা আলী আহসান জোনায়েদের পক্ষে প্রচার শুরু করেন। এর পাশাপাশি এমন প্রচারও চালানো হয় যে শিবিরকে ‘মাইনাস’ করে বামপন্থীদের নিয়ে রাজনীতি করতে চান আখতার। এ রকম পরিস্থিতিতে শনিবার রাত থেকে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে উত্তাপ ছড়াতে শুরু করে। আখতার হোসেনের শুভানুধ্যায়ীরা ফেসবুকে তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট করতে থাকেন। কেউ কেউ লেখেন, আখতারকে ‘মাইনাস’ করার পরিকল্পনা হচ্ছে। ফেসবুকে এমন আলোচনায় এক পক্ষে ছিলেন শিবিরের সাবেক নেতারা, অন্য পক্ষে ছাত্রশক্তি ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক নেতাদের পাশাপাশি দেখা গেছে মধ্যপন্থী অনেককে।

এমন অবস্থায় জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে রোববার ও সোমবার দুই দফায় বৈঠক করেন নেতারা। তবে সেই বৈঠকগুলোতে শিবিরের সাবেক নেতারা যোগ দেননি। অবশ্য সোমবার দুপুর থেকে শিবিরের সাবেক নেতাদের সঙ্গে নাগরিক কমিটির নেতৃস্থানীয়দের সমঝোতার অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই সমঝোতা একটি ‘সমাধানের’ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। মূলত নতুন দুটি পদ তৈরী করে সমাধানের পথ খুঁজা হচ্ছে বলেন জানিয়েছে সংস্লিষ্টরা।

সমঝোতা অনুযায়ী জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাম দুটি পদ তৈরী করে সাবেক শিবির নেতাদের ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমঝোতা অনুযায়ী আলী আহসান জোনায়েদকে নতুন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব হওয়ার কথা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর।

এদিকে দলের শীর্ষ পর্যায়ে অন্তত একজন নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজনকে দেখতে চাইছে জাতীয় নাগরিক কমিটির একটি অংশ। এ ক্ষেত্রে আলোচনায় রয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন ও যুগ্ম সদস্যসচিব অনিক রায়। সামান্তা শারমিন একসময় রাষ্ট্রচিন্তার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আর অনিক রায় বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *