জুলাই গণহত্যায় শহীদ হয়েছে বিএনপির ৪২২ নেতাকর্মী

অসংখ্য ব্যক্তি ও পরিবার রয়েছে, যাদের বছরের পর বছর ধরে ত্যাগের মহিমায় আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি, এমন মন্তব্য করে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন , জুলাই গণহত্যায় ১৩ আগস্ট পর্যন্ত বিএনপির ৪২২ জন শহীদ হয়েছেন । তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতাকে যখনই গ্রাস করেছে স্বৈরতন্ত্র, প্রতিবারই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বিএনপি। ১৬ বছরেরে স্বৈরাচারী দুঃশাসনকে চূর্ণ করে, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আবারও মুক্তির স্বাদ পায়, গণতন্ত্রের পথ সুগম হয়।

তিনি বলেন, দেশজুড়ে শহীদ হওয়া সকল শ্রেনী-পেশা-রাজনীতির মানুষগুলোর এই বিশাল অংশ যে বিএনপিরই নেতা-কর্মী এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং আমাদের সুদীর্ঘ রাজনৈতক সংগ্রামের অনিবার্য ফল। পোষাক শ্রমিক কিংবা রিক্সচালক, পাবলিক কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, বাম কিংবা ডান আদর্শের অনুসারী, সকল মত ও পথের রাজনৈতিক কিংবা অরাজনৈতিক ব্যক্তি হতাহতের পরিচয় যাই হোক না কেনো, প্রতিটি প্রাণের মূল্য ও রক্তের মর্যাদা সমান।

গতকাল রোববার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ‘গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পথযাত্রায় বিএনপির ভূমিকা, অবদান এবং প্রত্যাশা’র বিষয়গুলো তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বের অবদানে গড়ে উঠা দীর্ঘদিনের ঐক্যকে ধারণ করে, গণতন্ত্রের পক্ষের সকল শক্তির বলিষ্ঠ ভূমিকায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে। বাংলাদেশের জনগণের এই বিজয় শুধুই দেশের মালিকানা ফিরে পাওয়ার বিষয় নয়, এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার প্রতিশ্রুতি, যা অসীম ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগের জন্য যে জাতীয় ঐক্যমত্য আমরা দেখেছি তা কিন্তু হঠাৎ করে গড়ে ওঠেনি। এটি মূলত অবৈধ সরকারের অত্যাচার-অবিচার, দুর্নীতি-দুঃশাসন, বঞ্চনা-অবজ্ঞা এবং শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বর্হিপ্রকাশ। বিএনপি দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে গণআকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে গণঅভ্যুত্থানের সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে নেমে আসে। জনগণের কাতারে নেমে আসে বিএনপির সাথে সমমনা সকল রাজনৈতিক দল তথা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিসমূহ।

‘বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার। এটা করেই কিন্তু যারা দুষ্টু, যারা সবসময় ফয়দা লুটতে চায়। কারণ আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক দল নয়, গণবিরোধী একটা দল, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে গণতান্ত্রিক মানুষকে হত্যাকারী একটি দল। আর বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্রকে জীবন্ত করার দল। ১৯৭৫ সালে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান তিনি একদলীয় রাজনীতি থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলেন, বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছেন, আমরাই কেয়ারটেকার সিষ্টেম চালু করেছি। সুতরাং এদেশে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেয়ার ফান্ডামেন্টাল জিনিস প্রত্যেকটা আমাদের হাতে গড়া এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর আমরা করেছি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান এবং সালাহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *