আপিল বিভাগে আজ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদনের (রিভিউ) শুনানির কথা রয়েছে। ১৬ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ আবেদন করেছিলেন। এর আগে ২৫ আগস্ট সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন একই আবেদন করেন। সবশেষ বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আবেদন করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারী পক্ষ। এ আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। তবে সংসদ চাইলে পরবর্তী দশম ও একাদশ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলেও রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় দিয়েছিলেন। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাশ হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
তবে এবিষয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক মনে করেন, আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। কারণ, এটি বাতিল হয়েছিল জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাসের মাধ্যমে। যদিও পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে আদালতে একটি রিট করা আছে। এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হলে ফিরে আসতে পারে।
আর অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়টি বেআইনি ছিল। সে কারণেই বিএনপির পক্ষ থেকে রিভিউ আবেদন করা হয়েছে।