দেশত্যাগের নিশ্চয়তা পেলেই দেশে ফিরবেন সাকিব

কানপুর টেস্টের আগের দিন বাংলাদেশের ক্রিকেটে এলো বড় খবর। টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে বিদায়ী ঘোষণা দিলেন সাকিব আল হাসান। গত বিশ্বকাপেই তার শেষ টি-টোয়েন্টি খেলা হয়ে গেছে। ঘরের মাঠে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ দিয়ে টেস্টকে বিদায় জানাতে চান। তবে শুধুমাত্র দেশত্যাগের নিশ্চয়তা পেলেই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকে বিদায় নিতে দেশে ফিরবেন সাকিব।

কানপুরে সংবাদ সম্মেলনে তাই সাকিব বললেন, ‘আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোন সমস্যা না হয়। বোর্ড খেয়াল করছে। বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব।’

এ নিয়ে এর মধ্যে বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘এভাবেই ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে ও নির্বাচকদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যদি সুযোগ থাকে, আমি যদি দেশে যাই, খেলতে পারি, তাহলে মিরপুর টেস্ট হবে আমার জন্য শেষ। সেই কথাটা বোর্ডের সবার সঙ্গে বলা হয়েছে। তারা চেষ্টা করছেন কিভাবে সুন্দর ভাবে আয়োজন করা যায়।’

তবে ক্রিকেট বোর্ড ঠিক কতটুকু করতে পারবে তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। ইতিমধ্যেই সাকিবের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। আদাবর থানায় করা গার্মেন্টসকর্মীর প্রাণহানীর মোকদ্দমায় সাকিব আসামী। এখনও অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও তার নাম থাকা সাপেক্ষে দেশে আসলে হতে পারেন গ্রেফতার। ইতিমধ্যেই শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে করা হয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা ফাইন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাকিবের ভূমিকা নিয়েও ভক্তদের একটা অংশ তার ওপর ক্ষিপ্ত। এমতাবস্থায় সাকিবের নিরাপত্তা ব্যাপারটি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আসতে হবে বলেই মনে করেন ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান সভাপতি ফারুক। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আসতে হবে। বিসিবি কোনো এজেন্সি না, পুলিশ না, র‍্যাব না। সরকারের তরফ থেকে নিরাপত্তার ব্যাপারটি আসতে হবে।’

তিনি জানান, ‘সাকিব তার জীবনের কঠিন এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সব দিক থেকেই। আমার আসলে খুব বেশি কিছু বলার ছিল না। সে যে কারণ দেখিয়েছে, বোঝানোর চেষ্টা করিনি। একটা খেলোয়াড় যখন বুঝতে পারে তার সময়… সে মনে করেছে শর্টার ভার্শনে নতুন কারও জায়গা নেওয়ার সঠিক সময়। টেস্টেও সে খেলতে চেয়েছিল, ঢাকা থেকে অবসর নিতে চায়। এটাকে সম্মান জানিয়েছি।’

বিসিবি সভাপতি মনে করেন, বাংলাদেশ এখন ‘নিরাপদ’ হলেও বিতর্কিত সরকারের অংশ হিসেবে সাকিবের জন্য তা হয়ত ‘অনিরাপদ’। ফারুক আহমেদের ব্যাখ্যা, ‘বাংলাদেশ অনিরাপদ না। আমি তো এখানেই থাকি। কার জন্য নিরাপদ কার জন্য অনিরাপদ এটা একটু আপেক্ষিক ব্যাপার আরকি। সাকিব আর আমরা হয়ত সেইম লাইনে নাই। আমরা ভালোই আছি। ব্যক্তিগত ব্যাপারও বলব না। সে রাজনীতিবিদ, সবাই জানে। তার বিরুদ্ধে কেইস হয়েছে। সব ব্যাপার মিলিয়ে সে নিরাপদ না।’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *