২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিস্টে। বৃটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার খেতাব জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। ছাত্র- জনতার গণঅভ্যুত্থানে ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের পতন হওয়ায় এ খেতাব জিতল বাংলাদেশ।
প্রতিবছর সেরা দেশ নির্বাচনের সময় সাধারণত সবচেয়ে ধনী, সুখী বা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ দেশ হিসেবে না দেখে, বরং গত ১২ মাসে যেই দেশ সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে, সেই দেশকে সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এবারের তালিকায় বাংলাদেশের পাশাপাশি ছিল সিরিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড। তবে, ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ এর সংবাদদাতাদের মধ্যে ‘উত্তপ্ত বিতর্ক’ শেষে সেরা দেশ হিসেবে নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ এবং রানারআপ হয় সিরিয়া।
ব্রিটিশ সাময়িকীটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে আন্দোলনে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তিনি একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর কন্যা। একসময় তিনি বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি দমনপীড়ন শুরু করেন। পাশাপাশি নির্বাচনে কারচুপি করেন, বিরোধীদের জেলে পাঠান এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের গুলি করার নির্দেশ দেন। তাঁর সময়ে প্রচুর অর্থ চুরি হয়েছিল।
ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অস্থায়ী সরকার ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসা এবং নাগরিক সমাজের দ্বারা সমর্থিত। এটি শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করেছে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করছে।
২০২৫ সালে এই সরকারকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে এবং কবে নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এর আগে নিশ্চিত করতে হবে যে দেশটির আদালত নিরপেক্ষভাবে চলছে এবং বিরোধী দলগুলোকে সংগঠিত হওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। এর কোনোটিই সহজ হবে না।
তবে, একজন স্বৈরশাসককে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং আরও উদার সরকার গঠনের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য আমাদের এ বছরের সেরা দেশ বাংলাদেশ।