ফ্যাক্টচেকিং প্ল্যাটফর্ম রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশ এর বরাতে সম্প্রতি বিতর্কিত সংবাদ মাধ্যম ডেইলি ষ্টার জানিয়েছে যে, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার এবং তার জামিন নামঞ্জুরের পর সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের অপতথ্য ছড়িয়েছে।
ডেইলি ষ্টার এর সেই প্রতিবেদনে জানানো হয় , এই ইস্যুতে গণমাধ্যমের লোগো ব্যবহার করে অন্তত আটটি ভুয়া ফটোকার্ড ছড়ানো হয়েছে। এসব ফটোকার্ডে প্রচারিত গুজবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—তিনি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন, শিশু বলাৎকারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং ডিবি পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
তবে ঠিক কিসের ভিত্তিতে “শিশু বলাৎকারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন” এই দাবিকে গুজব বলে চালানোর চেষ্টা করছে ডেইলি ষ্টার তা শুধুমাত্র তারাই জানেন। নাকি শুধু মাত্র ভারতের হয়ে চিন্ময় পক্ষে সাফাই গাইতেই তাদের এই প্রতিবেদন?
এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বহুল আলোচিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইসকনের আন্তর্জাতিক শিশু সুরক্ষা কার্যালয় (ইসকন ইন্টারন্যাশনাল চাইল্ড প্রোটেকশন অফিস-সিপিটি) সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। গত বছরের ৬ অক্টোবর ইসকনের যুক্তরাজ্যস্থ ইসকনের সিপিটি থেকে জারিকৃত এক চিঠিতে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল এবং সেই নিষেধাজ্ঞা এখনো প্রত্যাহার হয়নি।
ইসকনের যুক্তরাজ্যস্থ ইসকনের সিপিটি থেকে জারিকৃত সেই চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের (আইনি নাম চন্দন ধর) ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসকন ইন্টারন্যাশনাল চাইল্ড প্রোটেকশন অফিস। এই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সিপিটির পরিচালক কমলেশ কৃষ্ণ দাস স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার ফলে চিন্ময় ইসকনের কোনো ব্যবস্থাপনা বা নেতৃত্বের পদে থাকতে পারবেন না। কোনো কীর্তনে নেতৃত্ব বা ক্লাস নিতে পারবেন না। প্রকাশ্যে শ্রীল প্রভুপদের কোনো পূজা আর্চনায় অংশ নিতে পারবেন না। ১৮ বছর বয়সের নিচে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না। বাংলাদেশের ইসকনের কোর কমিটি এবং সিপিটির কোনো পদধারী ব্যক্তি ছাড়া ইসকনের কোনো সম্পত্তিতে রাত যাপন করতে পারবেন না।
চিঠি পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে বলা হয়। আর কার্যকর করে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতেও বলা হয়।
এবিয়ে সিপিটি’র পক্ষে চিঠি ইস্যু করা ডিরেক্টর কমলেশ কৃষ্ণ দাসের কাছে চিঠিটির সত্যতার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি খুদে বার্তায় বলেন, আমরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এবং আমাদের আন্তর্জাতিক নীতি অনুযায়ী আমরা তার ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করি। নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত চিঠিটি সত্য। অভিযোগের ধরনের কারণে তদন্ত করতে আমরা এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলাম। যদিও তার সহযোগিতাসহ সুনির্দিষ্ট কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে বিষয়টি এখনো সূরাহা হয়নি।