ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী দাবি করেছেন যে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সদস্যরা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। তার আরও দাবি, এই সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী শিলিগুঁড়ি করিডরের কাছেও গিয়েছিলেন। শিলিগুঁড়ি করিডর, যা ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী এই দাবি করেন। সাক্ষাৎকারে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, সম্প্রতি ভারতের সীমান্তবর্তী এবং চিকেন নেকের সংবেদনশীল এলাকায় পাকিস্তানি সেনা ও গোয়েন্দাদের উপস্থিতি সম্পর্কে তিনি উদ্বিগ্ন কি না। জবাবে তিনি বলেন, “আমি একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের (পাকিস্তান) ক্ষেত্রে ‘সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্র’ শব্দটি ব্যবহার করেছি। যদি ওই দেশের নাগরিকরা অন্য কোনো স্থানে যায় এবং সেটি আমাদের প্রতিবেশী হয় এবং বিষয়টি আমাদের নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত হয়, তাহলে অবশ্যই এটি উদ্বেগের কারণ।”
পাকিস্তানের সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঠেকাতে বাংলাদেশের ভূমিকা
ভারতের সেনাপ্রধান আরও বলেন, বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে পাকিস্তান যেন কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে, সেটি তার প্রত্যাশা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে যেন ভারতে সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশ না ঘটে, সেটি নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
বাংলাদেশ-ভারত সামরিক সম্পর্ক
তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। তবে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে সামরিক সম্পর্কের প্রকৃতি সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, “যদি প্রশাসনের বিষয়ে কথা বলা হয়, তাহলে আমার দৃষ্টিভঙ্গি হলো, যখন সেখানে কোনো নির্বাচিত সরকার থাকবে, তখন আমাদের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের সম্পর্ক বেশ দৃঢ়। প্রয়োজনীয় সময়ে আমরা পারস্পরিক যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদান করতে পারি এবং সেটিই আমরা করে যাচ্ছি।”
কাশ্মির প্রসঙ্গে মতামত
কাশ্মির প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, পাকিস্তান কাশ্মির নিয়ে সর্বদা ব্যস্ত থাকবে এবং কখনোই এটি ভারতের অংশ হিসেবে স্বীকার করবে না। তার মতে, পাকিস্তানের প্রধান উদ্দেশ্য ভারত-বিরোধী মনোভাব ছড়ানো।
জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীর এই মন্তব্য ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে। তবে বাংলাদেশ সরকার বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি।