২৪ ফেব্রুয়ারী আত্মপ্রকাশ করতে পারে ছাত্রদের নতুন দল

নিশ্ছিদ্র প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত নতুন রাজনৈতিক দল, যা গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের উদ্যোগে গঠিত হচ্ছে। এ দলের নেতৃত্ব কারা গ্রহণ করবেন, সে বিষয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে কৌতূহল লক্ষ করা যাচ্ছে।

দলের কাঠামো, গঠনতন্ত্র, নাম ও প্রতীক নির্ধারণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে, যা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সম্পন্ন হতে পারে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন যে, ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে দল ঘোষণার বিষয়ে সকলেই একমত হয়েছেন। দল ঘোষণার পরপরই আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, ২৫ ফেব্রুয়ারি দল ঘোষণার প্রস্তাব উঠলেও, ওই দিনটি পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বার্ষিকী হওয়ায় ২৪ ফেব্রুয়ারি দল ঘোষণার সম্ভাবনা বেশি।

নাগরিক কমিটির শীর্ষ নেতাদের মতে, তারা ফেব্রুয়ারির মধ্যেই দল ঘোষণার পরিকল্পনা করছেন, বিশেষ করে ২৩-২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। এর অংশ হিসেবে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। নতুন দলের রাজনৈতিক কাঠামো নিয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে, যেখানে শুরুতে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে দল পরিচালনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক করার বিষয়ে প্রায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, সদস্য সচিব পদ নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। এ পদে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এগিয়ে রয়েছেন।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, নতুন এই দলে বিভিন্ন দলের তরুণ নেতাদের যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেউ কেউ দল ঘোষণার সময়ই যোগ দেবেন, আবার কেউ নির্বাচনের আগে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। ইতোমধ্যে ইসলামী ছাত্রশিবির ও বামপন্থী ছাত্রনেতাদের কয়েকজনের যোগদানের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। যদিও উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করেছেন, অন্য দুই তরুণ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম এখনই পদত্যাগ করবেন না বলে জানা গেছে।

নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব জানিয়েছেন, নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক হিসেবে নির্ধারণের বিষয়ে নীতিনির্ধারণী ফোরাম সম্মত হয়েছে। তিনি উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করলে নতুন দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করবেন। দলের নাম ও প্রতীকের বিষয়ে জনমত যাচাই করা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে অনলাইনে প্রায় দেড় লাখ মানুষ তাদের মতামত জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবেই থাকবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তবে নতুন রাজনৈতিক দলটি স্বতন্ত্রভাবে আত্মপ্রকাশ করবে, এবং যে কেউ ইচ্ছা করলে পূর্বোক্ত দুটি ফোরাম থেকে নতুন দলে যোগ দিতে পারবেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, “আমরা ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের মধ্যেই নতুন দল ঘোষণার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছি। ইতোমধ্যে গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র প্রণয়নসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সম্পন্ন হচ্ছে। শিগগিরই দলের নাম ও প্রতীক চূড়ান্ত করা হবে। গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী নেতারাই নতুন দলের নেতৃত্বে থাকবেন। এ দলে থাকবে কিছু চমকও। আমরা সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে একটি বাংলাদেশপন্থী রাজনৈতিক দল গঠনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *