১৯৭১ সালের পর গত সপ্তাহে প্রথম কোনো পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজ সরাসরি বাংলাদেশে নোঙর করেছে। পাকিস্তানের করাচি থেকে ওই জাহাজটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছিল। এভাবে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে জাহাজ আসার ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে ভারত। দেশটির সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া এমনটিই জানিয়েছে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সরাসরি সামুদ্রিক সংযোগ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে (সেভেন সিস্টার্স) সম্ভাব্য অস্থিরতা তৈরির কাজে ব্যবহার করা হতে পারে। কারণ, বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছে এই রাজ্যগুলো অবস্থিত।
তবে, এ নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন হলেও পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে জাহাজ আসার বিষয়টিকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। কারণ এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার পতনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য কার্যক্রম বাড়াতে আগ্রহী। সরাসরি সামুদ্রিক পথের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়বে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৮০০ মিলিয়ন ডলারেরও কম ছিল।
একটি সূত্রের বরাতে টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া বলেছে, বাংলাদেশের প্রধান দুই বন্দর চট্টগ্রাম ও মংলায় গত পাঁচ দশকে পাকিস্তান জায়গা পায়নি।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য হতো সিঙ্গাপুর ও কলম্বোর মাধ্যমে। কিন্তু এখন পাকিস্তানি জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে।
ভারত সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের এ দুটি বন্দর থেকে চীনকে দূরে রেখেছিল।
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র বলেছে, গত বছর মংলা পোর্টের টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে চীনের ওপর একটি কৌশলগত জয় পেয়েছিল ভারত। কিন্তু এখন পাকিস্তান চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে।
এই বিষয়টি অবশ্যই এই অঞ্চলের ভূরাজনীতির ওপর প্রভাব ফেলবে। কারণ মিয়ানমারও চট্টগ্রামের খুব কাছে।