জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ (Ali Riaz) বলেছেন, কমিশনের চলমান রাজনৈতিক সংলাপে কিছু কিছু অগ্রগতি দেখা গেলেও সামগ্রিকভাবে আশাব্যঞ্জক পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রোববার সকালে আয়োজিত বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বৈঠকটি ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার সপ্তম দিনের আলোচনা। সেখানে সূচনা বক্তব্যে আলী রীয়াজ বলেন, “গত সাতদিনে কিছু অগ্রগতি হয়েছে ঠিকই, তবে যে পর্যায়ে আমরা পৌঁছাতে চেয়েছিলাম, তা এখনও হয়নি। আমরা কেউই চাই না আবার সেই পুরনো, দমনমূলক বাস্তবতায় ফিরে যেতে।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান এবং সেই শাসনকে টিকিয়ে রাখার কাঠামোর পরিবর্তনই ছিল কমিশনের মূল লক্ষ্য। “এই সংকল্প থেকেই সবাইকে পাশে নিয়ে আমরা একত্র হয়েছিলাম। অনেক কর্মী প্রাণ দিয়েছেন, নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়েই আমরা আজ আলোচনায় বসেছি,” বলেন আলী রীয়াজ।
তিনি স্পষ্ট করেন যে, ঐক্যমত কমিশন কোনো দলের প্রতিপক্ষ নয়, বরং সবাই মিলে যে কাঠামো বদলাতে চাইছে, তার অংশ হিসেবেই কাজ করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান এবং সদিচ্ছার কারণেই কমিশন নমনীয় অবস্থান নিয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি ৭০ অনুচ্ছেদ এবং ‘উচ্চকক্ষ’ সংক্রান্ত প্রস্তাবের কথা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। রীয়াজ জানান, উচ্চকক্ষে রাষ্ট্রপতির মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিমত ছিল। শুরুতে ১০৫ সদস্য মনোনয়নের প্রস্তাব থাকলেও, আলোচনা শেষে ১০০ সদস্যে একমত হওয়া গেছে।
“জুলাই মাস একদিন পরই শুরু হচ্ছে,” স্মরণ করিয়ে দিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, “আমাদের প্রতিশ্রুতি রয়েছে যে জুলাইয়ের মধ্যেই জাতীয় সনদে উপনীত হওয়া যাবে। আমরা আশা করেছিলাম আবু সাঈদের শাহাদাতবার্ষিকীতে সবাই মিলে সেই সনদে স্বাক্ষর করব। কিন্তু সেটা আদৌ সম্ভব হবে কিনা, তা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করছে।”
তবে শেষ পর্যন্ত তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, সময় খুব কম। জুলাইয়ের মধ্যেই এই প্রক্রিয়ার একটি পরিণতির দিকে অগ্রসর হতে হবে। আর তা না হলে হয়তো ফের বিভেদের দিকেই ফিরে যেতে হতে পারে—যা কারও কাম্য নয়।