ইউনূস-রুবিও’র ফোনালাপ, দ্রুত নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও (Marco Rubio) সাম্প্রতিক এক টেলিফোনালাপে দেশের আগামী নির্বাচন, সংস্কার কর্মসূচি এবং দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন। প্রায় ১৫ মিনিটব্যাপী এই ফোনালাপ দুই দেশের মধ্যে চলমান সহযোগিতা এবং ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক কর্মপরিকল্পনার দিকনির্দেশনা দেয়।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, “দুই নেতা অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা করেছেন। আমি নিজেও তখন তাদের পাশে ছিলাম। তারা নির্বাচন বিষয়ে জানতে চেয়েছেন এবং সংস্কার প্রক্রিয়ায় সমর্থনের কথা বলেছেন। সেখানেই জানানো হয়েছে যে, যথাসময়ে এবং যথা শিগগিরই সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

তবে মার্কো রুবিও সরাসরি ‘শিগগির নির্বাচন চায়’—এমন কোনো মন্তব্য করেছেন কি না, তা স্পষ্ট করেননি তৌহিদ হোসেন। তাঁর ভাষায়, “এটি একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ আলাপ ছিল, নির্বাচন এবং সংস্কারের বিষয়গুলো স্বাভাবিকভাবেই আলোচনায় এসেছে।”

প্রশ্ন করা হয়, আলোচনায় ‘মানবিক করিডর’ ইস্যু ছিল কি না। জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তা নাকচ করে বলেন, “না, এমন কোনো প্রসঙ্গ আসেনি।”

ইউনূস-রুবিও’র ফোনালাপ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করার বিষয়ে উভয়পক্ষ অভিন্ন অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। একইসঙ্গে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যেও একমত হয়েছে দুই দেশ।

প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, আলোচনায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ক, চলমান রাজনৈতিক সংস্কার, গণতান্ত্রিক উত্তরণের রূপরেখা, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং রোহিঙ্গা (Rohingya) শরণার্থীদের সহায়তা। মার্কো রুবিও বাংলাদেশের চলমান সংস্কার প্রচেষ্টা এবং আগাম নির্বাচনের উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য এবং সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশ।” এর প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষ শিগগিরই দ্বিপক্ষীয় শুল্কসংক্রান্ত আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে, যা ভবিষ্যতে বাণিজ্য সম্পর্কের প্রসার ঘটাতে সহায়ক হবে।

ফোনালাপের পুরো পরিসর, তার ভাষা ও ব্যঞ্জনা বলছে—যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক রূপান্তরের দিকে কেবল নজর রাখছে না, বরং সরাসরি পরামর্শ ও প্রত্যাশাও জানাচ্ছে। এটি দেশের নির্বাচনী পথরেখায় আন্তর্জাতিক প্রভাবের এক নতুন দিকচিহ্ন হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *