গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া (Kotalipara) উপজেলায় আওয়ামী লীগের (Awami League) বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় মোট ১ হাজার ৬৫৫ জনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১২ গোপালীকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র রাজনৈতিক অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) কোটালীপাড়া থানার এসআই উত্তম কুমার সেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারে ১৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১ হাজার ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন: আব্দুল আলিম (১৮), মহিবউল্লাহ শেখ (৩৫), সিরাজুল শেখ (২০), দীপ্ত কাজী (২০), প্রিন্স অধিকারী (১৮), মোরশালিন মুন্সী (২৯), রিফাত বিশ্বাস (২৫), সাগর শেখ (৩৮), মানিক শেখ (৫৬), সজল দাড়িয়া (৩০), আব্দুল হাকিম (৩৫) ও টুটুল হাওলাদার (২৮)।
কোটালীপাড়া থানার (Kotalipara Police Station) অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে এই মামলা করা হয়েছে। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, “১৫৫ জন নামীয় ও ১ হাজার ৫০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।”
তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী পুলিশের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলাটি করা হয়েছে। একাধিক নেতা বলছেন, “এটি স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক পদক্ষেপ।”
পুলিশ পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় মামলাটি করা হয়েছে। ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নয়, শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতেই আইনের প্রয়োগ করছি।”
এই মামলার ফলে কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগপন্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক মহলে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে অনেক নেতা-কর্মী এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলেও জানা গেছে।
স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, আগামী দিনে কোটালীপাড়ার রাজনীতিতে এই মামলার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। পরিস্থিতি শান্ত করতে প্রশাসনের কৌশলী পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।