শেরপুরে এনসিপির সভায় ড্রোন দেখে ‘মিসাইল’ আতঙ্ক, দিগ্বিদিক ছোটাছুটি

শেরপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP) আয়োজিত পথসভা হঠাৎই এক উত্তেজনাকর নাটকীয়তায় রূপ নেয়। রবিবার (২৭ জুলাই) শহরের থানামোড়ে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে এক সময় দেখা যায় বিশৃঙ্খলা ও বিভ্রান্তি—সবকিছুর সূত্রপাত এক ড্রোন ক্যামেরা আর দু’জন উৎসুক জনতার মধ্যকার ছোটখাটো মনোমালিন্য থেকে।

‘জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে আয়োজিত পথসভায় অংশ নেন এনসিপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। অনুষ্ঠান চলাকালে হঠাৎ করেই সমাবেশস্থলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যখন দুই ব্যক্তির মধ্যে বসা নিয়ে তর্কাতর্কি হয়। সেই তর্ক মুহূর্তেই রূপ নেয় বাকবিতণ্ডায়। আশেপাশের লোকজন বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন এবং অনেকে পরিস্থিতি না বুঝেই হৈচৈ শুরু করে দেন।

ঠিক এই সময়েই আকাশে একটি ড্রোন উড়তে দেখা যায়, যা মূলত অনুষ্ঠান কাভারেজের জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু উপস্থিত অনেকেই ড্রোনকে ‘মিসাইল’ মনে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকে ধারণা করেন, আওয়ামী লীগ কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। মুহূর্তেই শুরু হয় দিগ্বিদিক ছোটাছুটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, অনেকে ভয়ে দৌড়াচ্ছেন, অনেকে আবার কিছুই না বুঝে হইচইয়ে মেতে উঠেছেন।

পরিস্থিতি তখনই স্বাভাবিক হয়, যখন সারজিস আলম (Sarjis Alam), এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক, মাইকে ঘোষণা দিয়ে জনতাকে আশ্বস্ত করেন যে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। তিনি জানান, এটা ছিল শুধুই একটি সাময়িক ভুল বোঝাবুঝি।

ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। অনেকেই বিষয়টিকে মজা করে শেয়ার করছেন, আবার কেউ কেউ সমাবেশ ব্যবস্থাপনার প্রশ্ন তুলেছেন। একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লেখেন, “ড্রোনকে মিসাইল ভেবে মানুষ দৌড়াতে শুরু করল—এটাই সম্ভবত বাংলাদেশি রাজনীতির সবচেয়ে বিরল দৃশ্য!”

এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন শেরপুর জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদ্য সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব মনিবুল ইসলাম (Monibul Islam)। তিনি বলেন, “দুইজন সাধারণ মানুষের মধ্যে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি থেকেই মুহূর্তে হৈ-হুল্লোড় তৈরি হয়। তবে নেতারা দ্রুত বিষয়টি সামাল দিয়েছেন।”

উক্ত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম (Nahid Islam), সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, সহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

সবমিলিয়ে, শেরপুরের রাজনৈতিক এই সমাবেশ শুধু বক্তব্য নয়, এক অপ্রত্যাশিত বিভ্রান্তি এবং পরে সামাজিক প্রতিক্রিয়ার মঞ্চ হিসেবেও রূপ নেয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *