অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার (Farida Akhter) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কসংক্রান্ত খসড়া চুক্তি প্রকাশ না করা নিয়ে ‘ভুল কথা বলেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam)। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে ফরিদা আখতার ভুল মন্তব্য করেছেন।”
প্রেস সচিব জানান, দ্বিপক্ষীয় চুক্তির খসড়া প্রকাশ না করা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ এবং এতে স্বচ্ছতার অভাব নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রতি সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনায় অগ্রগতি হলে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে গোপনীয়তার শর্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এর আগে, ফরিদা আখতার খসড়া চুক্তি প্রকাশ না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কৃষি খাত দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে এবং জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড অর্গানিজম (জিএমও) আনবে। তার মতে, এর মাধ্যমে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কৃষিতে প্রবেশ করবে এবং দেশীয় কৃষি কাঠামোতে বড় প্রভাব ফেলবে।
গত বুধবার ঢাকার প্রেস ইনস্টিটিউটে নাগরিক উদ্যোগ ও পিপলস হেলথ মুভমেন্ট আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ফরিদা আখতার বলেন, “আমেরিকানদের সঙ্গে যত আলোচনা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট— তারা কৃষিতে জিএমও আনবেই। আমার মন্ত্রণালয় কৃষি নয় বলে আমি কিছু করতে পারছি না, কিন্তু দেখা যাচ্ছে তারা কৃষি খাত নিয়ন্ত্রণে নিতে প্রস্তুত।”
তিনি আরও বলেন, নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট বা গোপনীয়তা চুক্তি একজন নাগরিক হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। “আমি নিজেই অসহায় বোধ করছি,” মন্তব্য করেন তিনি। ফরিদা আখতার উদাহরণ দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গরুর মাংস আমদানি হলে দাম ৩০০ টাকায় নেমে আসতে পারে, যেখানে বর্তমানে বাজারে দাম ৭০০–৮০০ টাকা। তবে এই আমদানির সঙ্গে হালাল জবাইয়ের বিষয়টি যুক্ত হয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— প্রয়োজনে তারা ৩০ হাজার মওলানা এনে হালাল নিয়মে জবাই করে মাংস রপ্তানি করবে। “এগুলো বলছি এই কারণে যে কোথায় গিয়ে চাপটা আছে— সেটা বোঝা যায়,” বলেন ফরিদা আখতার।