চলতি সপ্তাহেই ঘোষিত হবে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ: ইসি সচিব

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মপরিকল্পনা বা নির্বাচনী রোডম্যাপ এ সপ্তাহেই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ (Akhtar Ahmed)। সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।

সচিব বলেন, রোডম্যাপের খসড়া ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে। এখন তা কমিশনের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। তিনি আরও জানান, কর্মপরিকল্পনাটি মূলত বিভিন্ন আন্তঃঅনুবিভাগীয় সমন্বয় ও প্রাসঙ্গিক বিষয় মাথায় রেখে করা হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক সমন্বয় করা গেলে এ সপ্তাহেই চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশ করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সচিব বলেন, “নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বেগের কারণ নেই। প্রশাসন মাঠপর্যায়ে কাজ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তাদের দায়িত্ব পালন করছে। আমাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।”

তিনি জানান, মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক চলছে। ফোকাল পার্সন নির্ধারণ, পরিপত্র ও নির্দেশনা ইস্যু ইত্যাদি প্রক্রিয়া শিগগিরই গুছিয়ে নেওয়া হবে।

সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে সচিব বলেন, মোট ৮৩টি আসন নিয়ে আপত্তি এসেছে। এসবের শুনানি আগামী ২৪ আগস্ট থেকে শুরু হবে এবং টানা চার দিন চলবে। পরবর্তী সময়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

এনআইডি সংশোধনের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার আপিল জমা পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আবেদন বাতিল হলেও আপিলের মাধ্যমে পুনরায় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ডেটা এন্ট্রির প্রক্রিয়া উন্নত হলে আপিলের সংখ্যা কমে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ভোটার নিবন্ধনের জন্য ব্যবহৃত ফর্ম-২ প্রসঙ্গে সচিব জানান, ২০০৮ সাল থেকে কিছু ফর্ম এখনও স্ক্যান করা হয়নি। এগুলো স্ক্যান করে পোর্টালে যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। স্ক্যান সম্পন্ন হলে তথ্যভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হবে।

ভোটকেন্দ্র নিয়ে আলোচনায় তিনি বলেন, নতুন কোনো কেন্দ্র বাড়ানো হবে না, তবে যৌক্তিক প্রয়োজনে সমন্বয় আনা যেতে পারে। প্রতি বুথে বর্তমানে ৫০০ ভোটার থাকলেও তা ৬০০ করা হলে সহজেই সামঞ্জস্য করা যাবে।

রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রসঙ্গে সচিব জানান, ২২টি দলের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে যাচাই চলছে। যেসব দলের আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়, তাদেরকে চিঠি দিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে জানানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য হলো সব প্রস্তুতি আগে থেকেই সম্পন্ন করা, যাতে শেষ মুহূর্তে কোনো ধরনের হুড়োহুড়ি তৈরি না হয়। “আগে থেকে কাজগুলো এগিয়ে রাখলে সমন্বয় ভালো হয় এবং প্রয়োজনে পরিবর্তনেরও সুযোগ থাকে,” মন্তব্য করেন সচিব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *