বিএনপিকে ক্ষমতায় এলে প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হতে পারে—এমন সমালোচনার জবাবে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ (Salahuddin Ahmed) দৃঢ়ভাবে বলেছেন, বিএনপির রাজনৈতিক ইতিহাসই প্রমাণ করে যে দলটি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে। শনিবার (২৩ আগস্ট) এক বেসরকারি টেলিভিশনের বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এ প্রশ্ন তোলাই সঠিক নয়, এমন প্রশ্ন তোলা অবান্তর। বিএনপির ইতিহাস হলো সংস্কারের ইতিহাস, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ইতিহাস।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (Ziaur Rahman) ১৯৭৯ সালে বাকশাল বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু করেছিলেন, প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এবং নিশ্চিত করেছিলেন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। এরপর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া (Begum Khaleda Zia) ১৯৯১ সালে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা চালু করেন এবং ১৯৯৬ সালে জনদাবির মুখে কেয়ারটেকার সরকার প্রবর্তন করেন। “এগুলোই বিএনপির বাস্তবায়িত প্রতিশ্রুতির ইতিহাস,” বলেন সালাহউদ্দিন।
তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপির নিজস্ব এজেন্ডা হলো ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব, যা বর্তমান সরকারের জন্মের আগেই জনসমক্ষে ঘোষণা করা হয়েছিল। তাঁর ভাষায়, “আজ সেই প্রস্তাব ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে, এটি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে এক মহাকাব্যে পরিণত হয়েছে। আমরা এই সংস্কারের প্রবক্তা, তাই বাস্তবায়ন না করার প্রশ্নই আসে না।”
আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি আশাবাদী ভঙ্গিতে বলেন, ফেব্রুয়ারির ভোট হবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বমানের নির্বাচন। “এই নির্বাচন সেই জনগণের দাবি, যারা ভোটাধিকার আদায়ের জন্য রক্ত দিয়েছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে দীর্ঘ ১৬ বছর সংগ্রাম করেছে। আমরা চাই এ নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক,” মন্তব্য করেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং নির্বাচন কমিশনও ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। বিএনপিও নিজেদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে। তিনি আহ্বান জানান, সব গণতান্ত্রিক শক্তি আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করে তোলা উচিত, যাতে নির্বাচন গণতান্ত্রিক উত্তরণকে সহজতর করে।
আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য জোট প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের অঙ্গীকার আছে, যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী ছিল, তাদের সঙ্গে আমরা জোট করব। এর বাইরে ইসলামপন্থী কিছু দল এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গেও আলোচনা হতে পারে। তবে এখনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিভক্তি নয় বরং ঐক্যের মাধ্যমেই জাতিকে এগিয়ে নিতে হবে।