ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। এখন যে কোনো সময়ই এ রোডম্যাপ প্রকাশ হতে পারে বলে জানিয়েছেন কমিশনের কর্মকর্তারা।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার (Anwarul Islam Sarkar) সংবাদ সংস্থা বাসসকে বলেন, “কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদনও হয়েছে। এখন শুধু টাইপিং চলছে।”
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন (A M M Nasir Uddin), চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এক বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পর আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের সামনে বিষয়টি তুলে ধরেন।
এদিকে আগামীকাল বৃহস্পতিবারই জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ (Akhtar Ahmed)। তিনি জানান, “রোডম্যাপ প্রকাশে আর দেরি হবে না—হয়তো আগামীকালই তা প্রকাশ করা সম্ভব হতে পারে।”
আজ বিকেলে সংসদীয় আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানা নিয়ে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা এখনও কিছু কাজ করছি। আমি মনে করি, হয়তো আগামীকাল আপনাদের আরও তথ্য দিতে পারব। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।”
সাংবাদিকরা যখন প্রশ্ন করেন, রোডম্যাপ ঘোষণা তাহলে নিশ্চিত? জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, “সম্ভবত আমার টেবিলে এখন আছে। আগামীকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন না। একটা দিনের জন্য খুব বেশি কি আটকাবে?”
শুনানির মধ্যেই উত্তেজনা
জাতীয় সংসদের আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শুনানির প্রথম দিনেই কমিশনে ঘটে বিশৃঙ্খলা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসন নিয়ে শুরু হয় হাতাহাতি, যা নিয়ে সাংবাদিকরা কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিবকে প্রশ্ন করেন—ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে আরও বড় বিশৃঙ্খলা হলে কী হবে?
এ প্রসঙ্গে আখতার আহমেদ বলেন, “এটার সঙ্গে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের সম্পর্ক নেই। বাইরে ধাক্কাধাক্কি হলে তার দায় তো কমিশনের নয়। আমরা পুলিশের কাছে সাধারণ ডায়েরি করেছি এবং তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আমার মনে হয় এই পর্যন্তই বলা যথেষ্ট।”
পাসপোর্ট জব্দের খবর অস্বীকার
নির্বাচন কমিশন কয়েকজনের পাসপোর্ট জব্দ করেছে—এমন প্রশ্নে জ্যেষ্ঠ সচিব স্পষ্ট জানান, “আমার কানেও এ ধরনের খবর এসেছে। কিন্তু কমিশনের এ রকম কোনো এখতিয়ার নেই। আমরা পাসপোর্ট জব্দ করিনি।”
সীমানা পুনর্নির্ধারণে ব্যাপক অংশগ্রহণ
গত চার দিনে ৩৩ জেলার ৮৪টি আসনের সীমানা নিয়ে শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। এ সময়ে মোট ১১৮৫টি আপত্তি এবং ৭০৮টি সুপারিশ জমা পড়ে। অর্থাৎ মোট প্রস্তাব ও আপত্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৯৩।
২৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় ৬ জেলার ১৮ আসনের শুনানি, ২৫ আগস্ট ৯ জেলার ২০ আসন, ২৬ আগস্ট ৬ জেলার ২৮ আসন এবং আজ ২৭ আগস্ট ১২ জেলার ১৮ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শুনানি হয়।