মওদুদী মতাদর্শে বিশ্বাসী নেতাদের বড় বড় পদে বসিয়েই জাতীয় রাজনীতিতে জায়গা করে নেবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party – NCP)। কিন্তু এ কৌশল তাদের জন্য কতটা কার্যকর হচ্ছে, তা নিয়ে এখনই দলটির ভেতরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশেষ করে সম্প্রতি ডাকসু ও জাকসুর নির্বাচনের ফলাফলের পর দলটি নিজেদের অবস্থান স্পষ্টভাবে অনুধাবন করার সুযোগ পেয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।
মাঠপর্যায়ে জামায়াতঘনিষ্ঠদের সক্রিয়তা দেখা গেলেও ভোটের রাজনীতিতে এর কোনো সুফল মিলছে না—এটা ছাত্রনেতাদের বুঝতে পারা উচিত ছিল বলেই মনে করেন অনেকেই। কারণ সংগঠনের উপস্থিতি থাকলেও জনভিত্তিক রাজনীতিতে এর প্রতিফলন ঘটেনি।
আবার একই সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত হয় জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনের সাথে মিলে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ’র দাবিতে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে এমন খবর প্রকাশের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পাল্টে যায় দলটির অবস্থান। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দলটি এখনই সাত দলের কর্মসূচির সঙ্গে যুগপৎ কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছে না। তারা আপাতত আলাদা কর্মসূচি নিয়ে ভাবছে। এ ব্যাপারে এনসিপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, এনসিপি গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চায়। বিভিন্ন দলের সঙ্গে এটিসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আমাদের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। অভিন্ন ইস্যুতে যুগপৎ আন্দোলনের আলোচনাও আছে। তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
এমন এক সময়ে সামনে এল দলটির আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে পরিচিত উপদেষ্টা মাহফুজের বক্তব্য। সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি খোলাখুলিভাবে জানান—
“বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে আমাদের আর কোনও মওদুদী পন্থী দলের প্রয়োজন নেই। ইতিমধ্যেই অর্ধ ডজন দল আছে। আপনি কিছুই যোগ করতে পারবেন না! বরং, পুনঃসংজ্ঞায়িত করুন, পুনর্গঠন করুন এবং পুনরুদ্ধার করুন।”
তার এই বক্তব্য যেন দলীয় ভেতরের বাস্তব সংকটকেই প্রতিফলিত করেছে। এখন প্রশ্ন উঠছে—ডাকসু-জাকসুর নির্বাচন কিংবা মাহফুজের এই উপলব্ধি, কোনটি আসলে এনসিপির ভবিষ্যৎ কর্মকৌশলে বড় প্রভাব ফেলবে?