‘কাউকে মারার দায়িত্ব তোমার নয়, গণঅভ্যুত্থানের সরকার নিজেই সামলাক’—আবেগঘন বার্তায় শামারুহ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)-এর মেয়ে শামারুহ মির্জা ফেসবুকে একটি আবেগঘন পোস্ট করেছেন। বাবার কারাজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি দলীয় কর্মীদের প্রতি গভীর সহানুভূতি জানানোর পাশাপাশি অতীতের সংঘাতমুখী রাজনীতি থেকে সরে এসে উদার গণতান্ত্রিক চর্চার আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে শামারুহ লিখেছেন, তিনি যখন বাবাকে জেলে দেখতে যেতেন, তখন বাবার মুখে নিজের কষ্টের কথা নয়, বরং কর্মীদের দুর্দশার গল্পই শুনতেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘আব্বু বলতো, ছেলেগুলোর কারও নখ তুলে নিয়েছে, কারও শরীর জুড়ে মারের দাগ। কেঁদে ফেলতো আব্বু। তিনি নিজেকে খুব অপরাধী ভাবতেন। বলতেন, এই ছেলেরা আন্দোলনে জীবন শেষ করেছে, কেউ বিয়ে করেনি, অনেকে পড়াশোনা ঠিকমতো করতে পারেনি। ফেরার সময় আম্মুকে বলতেন, কিছু টাকা দিয়ে যেয়ো। সেই টাকাই কর্মীদের খাবারের জন্য খরচ করতেন।’

নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত উপলব্ধি শেয়ার করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘পনেরো বছরে গায়ে অনেকের আঁচড় লাগেনি, এখন উড়ে এসে জুড়ে বসে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। তুমি এখন কি করবা? কান্নাকাটি করবা, কমপ্লেইন করবা, নাকি ব্যাপারটা বুঝে নিজের দিকে তাকাবা?’

শামারুহ তার বার্তায় দীর্ঘদিনের সংগ্রামী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যারা গত পনেরো বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামীদের বিরুদ্ধে লড়েছো, মাঠে-খেতে, বিলে লুকিয়ে থেকেছো, জেলে গেছো, মার খেয়েছো—এখন নিজের জীবন নিয়ে ভাবো। এখন নিজের জীবন আর নিজের দেশ গড়ার সময়। কে কি করল বা বলল তা ভেবে লাভ নেই। ক্যারিয়ার গড়ো, সত্যিকারের জাতীয়তাবাদী রাজনীতি করো, কিন্তু কারও ক্যাডার হয়ো না। এই ভাই-ওই ভাইয়ের পেছনে না ঘুরে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী রাজনীতি আর লিবারেল ডেমোক্রেসির চর্চা করো, মানুষের সেবা করো। না, কাউকে মারার কাজ তোমার নয়। ইউ হ্যাভ ডান ইট এনাফ। গণঅভ্যুত্থানের সরকার নিজেই সামলাক।’

রাজনীতির প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘লাইফে সবচেয়ে জরুরি হলো ঈমান আর স্ট্রাটেজি। তুমি যখন আত্মবিশ্বাসী হবে, রাজনীতিও সোজা হয়ে যাবে। তাতেই দলের সবচেয়ে উপকার হবে। The choice is yours!’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *