অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণামতে, আগামী বছরের (২০২৬) ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতোমধ্যেই এ লক্ষ্যে রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে এবং জানানো হয়েছে, ভোটের দুই মাস আগে ঘোষণা করা হবে তফসিল। সেই প্রেক্ষাপটে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন নির্বাচনী উত্তাপে মুখর।
প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি (BNP) ও জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami) সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল নিজেদের প্রস্তুতি জোরদার করছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি দল আসনভিত্তিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নামও প্রকাশ করেছে।
জামায়াতে ইসলামী জানিয়ে দিয়েছে, তারা ৩০০ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) খুলনায় ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার (Mia Golam Porwar) বলেন, “৩০০ আসনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে ইসলামী সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা হলে কিছু আসন ছেড়ে দিতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে ১০০ আসন ছাড়লেও, জামায়াত কমপক্ষে ২০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।”
তিনি আরও বলেন, “দ্বীনকে জাতীয় সংসদে পাঠানোর জন্য বর্তমান সময়টিই সবচেয়ে উপযুক্ত। যারা একসময় ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের এখন দেশের জন্য সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।”
‘সম্প্রীতির টানে শিকড়ের পানে’ শিরোনামে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তিনি খুলনার ছাত্রশিবিরের প্রয়াত নেতা আমিনুল ইসলাম বিমান, মুন্সী আব্দুল হালিম, আমানুল্লাহ আমান, শেখ রহমত আলী, আবুল কাশেম পাঠান এবং সাংবাদিক শেখ বেলাল উদ্দিনের ত্যাগ ও অবদানের কথা স্মরণ করেন। তার মতে, তাদের সংগ্রাম বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে আছে।
ক্ষমতা প্রসঙ্গে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “ক্ষমতা আল্লাহর দান। কে ক্ষমতায় যাবে আর কে যাবে না, তার সিদ্ধান্তও আল্লাহর। তাই দম্ভ প্রকাশ করা উচিত নয়। কেউ কেউ মনে করেন, তারা ক্ষমতায় গেছেন—এমন দম্ভ দেখানো একেবারেই ঠিক নয়।”
এছাড়া নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়েও তিনি মত দেন। তার ভাষায়, “বিশ্বের ৯১টি দেশে পিআর চালু আছে, এবং এর ৬-৭টি ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য কোনটি উপযোগী, সে বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।”
খুলনাসহ যেসব ময়দানে শিবিরের রক্ত ঝরেছে, সেই স্থানগুলোতেই ইসলামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রচিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের এই নেতা।