ডিসেম্বরেই শেষ হচ্ছে ডা. শফিকুর রহমানের মেয়াদ, নতুন আমির নির্বাচনে প্রস্তুত জামায়াতে ইসলামী

জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান আমির ডা. শফিকুর রহমান (Dr. Shafiqur Rahman)-এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে দলটিকে নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে হবে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক মহলে ও জনমনে কৌতূহল দেখা দিয়েছে—কে হচ্ছেন জামায়াতের পরবর্তী আমির? শফিকুর রহমান কি তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হবেন, নাকি সামনে আসবে নতুন মুখ?

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শফিকুর রহমান দায়িত্ব নেওয়ার পর তার সংস্কারমুখী ও যুগোপযোগী নেতৃত্বে জামায়াতের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তার কার্যকর চিন্তা-ভাবনা দলের ভেতরে তার জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে। ফলে রুকনরা (সদস্যরা) বৃহৎ স্বার্থে আবারও তাকেই নির্বাচিত করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের অনেকেই এখন দলের আমীর পরিবর্তনে আগ্রহী নন। তবে তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় দলের বেশ কিছু উপর সারির নেতারা তাকে পরিবর্তনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে ।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ডিসেম্বরেই নতুন আমির নির্বাচন করতে হবে জামায়াতকে। দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানিয়েছেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সংগঠনগুলোর মেয়াদ তিন বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন নেতৃত্বের নির্বাচন হয়। তার ভাষায়, “আমাদের ৫ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন আছে। তারা আশা করছেন, অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আমিরে জামায়াত এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা—এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন হবে। এরপর শপথসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করা হবে।”

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামীতে ‘আমির’ই সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পদ। তিনি তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হন। পরে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যদের পরামর্শে নায়েবে আমির, সেক্রেটারি জেনারেল, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলসহ অন্যান্য নির্বাহী পদে দায়িত্ব বণ্টন করেন আমির।

উল্লেখ্য ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতের লাহোরে (বর্তমানে পাকিস্তান) মাওলানা মওদূদীর হাত ধরে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে আমির পদে দায়িত্ব পালন করেছেন ৬ জন নেতা। ১৯৫৬-১৯৬০ পর্যন্ত মাওলানা আবদুর রহিম, ১৯৬০-১৯৭১ এবং ১৯৯২-২০০০ পর্যন্ত অধ্যাপক গোলাম আযম, ১৯৭৯-১৯৯২ পর্যন্ত আব্বাস আলী খান (ভারপ্রাপ্ত), ২০০০-২০১৬ পর্যন্ত মতিউর রহমান নিজামী, ২০১৬-২০১৯ পর্যন্ত মকবুল আহমদ এবং ২০১৯ ও ২০২২ সালে টানা দুই মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে এখনও দায়িত্ব পালন করছেন ডা. শফিকুর রহমান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *