আরপিও সংশোধনে আপত্তি জানিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে যা মনে করিয়ে দিল বিএনপি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (Representation of the People Order) সংশোধনের প্রেক্ষিতে ২০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তনের বিরোধিতা করে বিএনপি (BNP) চিঠি দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল (Asif Nazrul)-কে। চিঠিতে বিএনপি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, জোটগতভাবে প্রতীক ব্যবহারের পূর্বের বিধান অক্ষুন্ন রাখতে হবে।

চিঠিতে বলা হয়, আরপিও’র বিভিন্ন অনুচ্ছেদ সংশোধনের বিষয়ে দলটি একমত থাকলেও ২০ অনুচ্ছেদের রাজনৈতিক দল/জোটের প্রতীকের বিষয়ে কোনো পরিবর্তন যেন আনা না হয়—সে বিষয়ে আগেই তারা মতামত দিয়েছিল। ২৫ অক্টোবর পাঠানো ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “আপনি আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে ২০ নম্বর অনুচ্ছেদে কোনো রকম সংশোধনী আনা হবে না। অর্থাৎ পূর্বের বিধানই বহাল থাকবে।”

কিন্তু সেই আশ্বাসের পরও ২৪ অক্টোবর বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ‘জোট করলেও ভোট করতে হবে দলীয় প্রতীকে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিএনপির নেতারা হতবাক হন। চিঠিতে তারা বলেন, “বিশেষ করে, সরকারের সম্মানিত আইন উপদেষ্টা হিসেবে আপনি আমাদেরকে আশ্বস্ত করার পরও এই সংশোধনী অত্যন্ত দুঃখজনক।”

বিএনপি দাবি করেছে, তারা এই বিষয়ে জনসমক্ষে কিছু বলেনি কেবলমাত্র উপদেষ্টার আশ্বাসের ওপর ভিত্তি করেই। কিন্তু এখন তারা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছে, এই সংশোধনী তাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। চিঠিতে বলা হয়, “আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে পুনরায় আপনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে জানাতে চাই যে, ২০ অনুচ্ছেদের এই সংশোধনী গ্রহণযোগ্য নয় এবং বিএনপি এই সংশোধনীর সঙ্গে একমত নয়।”

তারা যুক্তি দিয়েছে, অতীতের সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের ইচ্ছামতো জোট গঠন করে কখনো নিজেদের প্রতীক, কখনো জোটের অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করেছে। এটি রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। বিএনপির মতে, বর্তমান সংশোধনী সেই অধিকার ক্ষুণ্ণ করে।

বিএনপির ভাষায়, “প্রধান স্টেকহোল্ডার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগণতান্ত্রিক।” দলটি মনে করে, জোটের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে নির্বাচনে জয়লাভ, এবং সে লক্ষ্যে জোটবদ্ধ দলগুলোর পছন্দমতো প্রতীক ব্যবহারের অধিকার থাকা উচিত।

চিঠির শেষাংশে বিএনপি আবারও অনুরোধ জানিয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ২০ এর পূর্বের বিধান পুনরায় বহাল রাখতে এবং এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *