গণভোটের সময় ও বিষয়বস্তু নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তুলতে এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আগামী সাত দিনের মধ্যে দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ সুপারিশ জানাতে আহ্বান জানিয়েছে সরকার। অন্যথায়, সরকার নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল (Dr. Asif Nazrul)।
সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন তিনি। আসিফ নজরুল বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিল। এখন তাদেরই উচিত নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনা করে গণভোটের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো। যদি তারা তা করতে না পারে, তাহলে সরকার নিজ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।”
আইন উপদেষ্টা আরও জানান, সভায় ‘ঐকমত্য কমিশন’-এর প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ, সংবিধান সংস্কার আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং তাতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজনের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তবে তিনি উল্লেখ করেন, কমিশনের দীর্ঘ আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো ভিন্নমত রয়ে গেছে।
সভায় এ বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় যে, গণভোটের সময়, আয়োজন ও মূল বিষয়বস্তুকে ঘিরে দলগুলোর মধ্যে মতভেদ স্পষ্ট। তাই, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো প্রয়োজন বলে সভায় অভিমত গৃহীত হয়।
সভায় আরও বলা হয়, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে দীর্ঘদিনের সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলো যেন নিজেদের উদ্যোগে দ্রুততম সময়ে আলোচনায় বসে, সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সরকারের কাছে একটি ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা পেশ করে। এমন দিকনির্দেশনা পাওয়া গেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হবে বলেও সভায় মত দেওয়া হয়।
আইন উপদেষ্টা স্পষ্ট করে বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই—এটা আমাদের সবার উপলব্ধি করা উচিত।” তিনি আরও জানান, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সরকারের দৃঢ় সংকল্পও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।


