দীর্ঘ জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিএনপি (BNP) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (Khaleda Zia) নিজ বাসায় তলব করে সিলেটের আলোচিত রাজনীতিক ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী (Ariful Haque Chowdhury)–কে সিলেট-৪ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। বুধবার (৫ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবনে ভার্চুয়ালি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
দলীয় দায়িত্ব পালনে কখনোই পিছপা হননি উল্লেখ করে আরিফুল হক গণমাধ্যমে বলেন, “চেয়ারপারসনের নির্দেশ আমি কখনো অমান্য করিনি, করবও না। সব আল্লাহর ইচ্ছা। আমি সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করব।”
উল্লেখ্য, শুরুতে তিনি সিলেট-১ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু ওই আসনে দল মনোনয়ন দেয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মুক্তাদিরকে। এরপর কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ঢাকায় ডেকে এনে বৈঠকের মাধ্যমে তাকে সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
রাজনীতিতে দীর্ঘ পথচলা
১৯৫৯ সালের ২৩ নভেম্বর সিলেটের কুমারপাড়ায় জন্ম নেওয়া আরিফুল হক চৌধুরী রাজনীতিতে উঠে এসেছেন স্থানীয় পর্যায় থেকে। ওয়ার্ড কমিশনার হিসেবে কাজ শুরুর পর তিনি সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কমিটির প্রধান হন।
২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার সময় তিনি আত্মসমর্পণ করেন এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার মুখোমুখি হন। দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের সাজা হলেও ২০১৩ সালে তিনি আদালত থেকে খালাস পান।
মেয়র হিসেবে দুইবারের বিজয়ী
২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে পরাজিত করে সিলেটের মেয়র হন আরিফুল হক। ২০১৮ সালেও তিনি পুনর্নির্বাচনে জয়লাভ করেন। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে তিনি কামরানকে ৬,১৯৬ ভোটে হারান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে শপথ গ্রহণ করেন।
তার মেয়াদকালে সাইফুর রহমান শিশু পার্কসহ নগর অবকাঠামো, সড়ক উন্নয়ন, পানির সরবরাহ ও জলাবায়ু খাতে বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়।
বিতর্কের মধ্যেও নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা
২০১৪ সালে তিনি শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত হন এবং গ্রেফতার হন। ২০১৫ সালে তাকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করা হলেও উচ্চ আদালতের আদেশে তিনি আবার দায়িত্বে ফিরে আসেন।
আরিফুল হক বর্তমানে বিএনপির জাতীয় কমিটির উপদেষ্টা ও দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা হিসেবে বিবেচিত। তার রাজনীতিতে প্রভাবশালী অবস্থান সিলেট অঞ্চলে সুপ্রতিষ্ঠিত।
পারিবারিক জীবনে তিনি স্ত্রী ও সন্তানসহ বসবাস করেন এবং রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সিলেটের সামাজিক উন্নয়নেও সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।


