গোপালগঞ্জ সংঘর্ষে দায় এনসিপি-আওয়ামীলীগ দুই পক্ষেরই: তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট

গত জুলাই মাসে গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং আওয়ামী লীগের স্থানীয় কর্মী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষই দায়ী—এমন তথ্য উঠে এসেছে সরকারের গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্তে। সংঘর্ষের পেছনে ছিল পরস্পরের উসকানি, গুজব, কঠোর অবস্থান এবং মাঠের বাস্তবতা সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্যকে গুরুত্ব না দেওয়া—যার ফলে প্রশাসন সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয় বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে।

সরকারের গঠিত ছয় সদস্যের এই তদন্ত কমিশনের এক সদস্য সাজ্জাদ সিদ্দিকী বিবিসি বাংলাকে জানান, “কমিশনের প্রতিবেদনে ৮ থেকে ১০টি সুপারিশ রয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন সহিংসতা এড়াতে পাঁচটি করণীয়ও চিহ্নিত করা হয়েছে।”

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—কে বা কারা গুলি চালিয়েছিল এবং সেই গুলিতে পাঁচ জনের প্রাণহানি হয়েছিল—সেই প্রশ্নের জবাব এই তদন্তে পাওয়া যায়নি। কারণ গুলির বিষয়টি কমিশনের কার্যপরিধির (Terms of Reference) মধ্যে ছিল না বলে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপি আয়োজিত এক জনসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে রূপ নেয় পরিস্থিতি। এ সময় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে এবং পাঁচ জন নিহত হন গুলিতে। জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, আর প্রশ্ন ওঠে—কার গুলিতে মৃত্যু?

এই ঘটনার পর সরকার সাবেক একজন বিচারপতিকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি কমিশন গঠন করে। তাদের দায়িত্ব ছিল—ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন, দায়ী পক্ষ চিহ্নিত করা এবং ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে সুপারিশ প্রদান।

তদন্ত শেষে গত সেপ্টেম্বরের শেষে প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়। তবে এখনো পর্যন্ত ওই প্রতিবেদন সরকারিভাবে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। এতে পরিস্থিতি ঘিরে জনমনে আরও প্রশ্ন ও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *