বিএনপি (BNP) স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী (Amir Khasru Mahmud Chowdhury) বলেছেন, “ঐকমত্যের চ্যাপ্টার ক্লোজড, এখন একমাত্র পথ নির্বাচন।” তিনি বলেন, যে পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হয়েছে, যে জুলাই সনদ সই হয়েছে, এখন সেটা নিয়ে আর কথা বাড়ানোর কিছু নেই—এখন নির্বাচনই মূল ফোকাস হওয়া উচিত।
সোমবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)-এর ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারের শিরোনাম ছিল—“দক্ষ জনশক্তি-দেশগঠনের মূল ভিত্তি।”
আমির খসরু বলেন, “চলুন এবার নির্বাচনে যাই। জনগণের কাছে ঐক্যমতের বিষয়গুলো নিয়ে যান। আপনাদের যদি কোনো দাবি, দাওয়া বা প্রোগ্রাম থাকে, সেটাও জনগণের কাছে তুলে ধরুন।”
তিনি সরাসরি বলেন, “ঢাকায় বসে ঝগড়াঝাটি করে সময় নষ্ট না করে, কাউকে বাধ্য না করে নিজে জনগণের কাছে যান। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসুন। এখানে সিদ্ধান্ত দেওয়ার মালিকানা কারও নেই—না কোনো সরকার, না কোনো ঐকমত্য কমিশন, না কোনো রাজনৈতিক দলের।”
তিনি যোগ করেন, “জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে। সংসদে গিয়ে তাদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী দাবিগুলো পূরণ করুন। রাজধানীতে বসে কিছু লোক সিদ্ধান্ত দেবে—এ ধারণা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।”
আইডিইবি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক প্রকৌশলী মো. কবীর হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী আশরাফুল আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন আইডিইবির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব প্রকৌশলী কাজী সাখাওয়াত হোসেন এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল আজিজ।
জাতীয় উন্নয়ন প্রসঙ্গে আমির খসরু বলেন, “নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) যুগে যারা পিছিয়ে পড়বে, তাদের উন্নয়ন টেকসই হবে না।”
তিনি জানান, বিএনপি সরকার গঠন করলে গ্রামীণ কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে, যাতে মানুষকে কর্মের খোঁজে ঢাকা বা চট্টগ্রামে ছুটে আসতে না হয়।
তার ঘোষণা অনুযায়ী, সরকার গঠনের এক বছরের মধ্যে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। এজন্য আইটি, কলসেন্টার, নার্সিং, কুটিরশিল্পসহ বিভিন্ন খাতে প্রশিক্ষণ ও সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
“তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে। এতে দুর্নীতি ও হয়রানি কমবে, সময় ও অর্থের অপচয়ও রোধ হবে,” বলেন আমির খসরু।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো জনগণের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। ঢাকায় বসে রাষ্ট্র চালানো নয়—জনগণের রায় নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি গ্রহণ করতে হবে।”
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কোনো মেগাপ্রকল্প নয়, বরং জাতীয় বাজেটের ৫ শতাংশ শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ রাখা হবে বলেও জানান তিনি।


