আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে—এমন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। ভোটারদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিতে ভোটের দিনসহ আগের বুধবারকেও ছুটি ঘোষণার জন্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে কমিশন। যদি ছুটি ঘোষণা করা হয়, তাহলে নাগরিকরা ভোটের আগে-পরে মিলিয়ে টানা চার দিনের ছুটি ভোগ করতে পারবেন।
ইসির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভোটের তারিখ নিয়ে প্রাথমিকভাবে ৮ ফেব্রুয়ারি (রোববার) বিকল্প তারিখ হিসেবে বিবেচনায় ছিল। সেই দিনটির আগে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ভোটের পর বিশ্রামের সুযোগ কম থাকত। এ বিবেচনায় শেষপর্যন্ত ১২ ফেব্রুয়ারিকেই উপযুক্ত বলে সিদ্ধান্তে আসে কমিশন।
রবিবার অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে চূড়ান্ত তফসিল অনুমোদনের কথা রয়েছে। এরপর বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে ভোটের তফসিল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীন (AMM Nasir Uddin)।
নির্বাচন সামনে রেখে জনমনে নানা প্রশ্ন ও আলোচনা থাকলেও নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিতে কোনো ছন্দপতন দেখা যাচ্ছে না। তবুও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি (BNP) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার (Khaleda Zia) শারীরিক অবস্থা ঘিরে নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে নির্বাচনের সময় পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় তরুণ রাজনীতিক সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। যদিও তার পরদিনই বিএনপি প্রতিনিধি দল সিইসির সঙ্গে দেখা করে দলীয় প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে জানিয়ে যথাসময়ে তফসিল ঘোষণা ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত জানায়।
এ প্রসঙ্গে এক নির্বাচন কমিশনার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ ও ভোটের দিন চূড়ান্ত হয়েছে, এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি।”
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ (Abdur Rahmanel Mashud) বলেন, “নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি গুছিয়ে আনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পরই তফসিল ঘোষণা করা হবে।”
সরকারের কাছে পাঠানো ছুটির প্রস্তাব বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সব মিলিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলেও তার চারপাশ ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ, অনিশ্চয়তা ও জনমনে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। তবে নির্বাচন কমিশন নিজেদের পথেই এগিয়ে যাচ্ছে—সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের দাবি-দাওয়ায় পাত্তা না দিয়েই।


