আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ সুপাররা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা চেয়েছেন। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বাড়ানোরও জোর সুপারিশ করেছেন তারা।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ডিসি-এসপি সম্মেলনে এই দাবি উঠে আসে। সম্মেলনে অংশ নেন জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), রেঞ্জ ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার এবং আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা।
এসপিরা বলেন, “নির্বাচনের দিন পরিস্থিতি সামাল দিতে আমাদের যেমন যানবাহনের সংকট রয়েছে, তেমনি জনবলও প্রয়োজনের তুলনায় কম। দুই বা ততোধিক আসনে একদিনে ভোট হলে সেটা হবে বড় চ্যালেঞ্জ।”
তারা আরও বলেন, “অভিযানে গিয়ে আমরা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করছি, আসামি ধরছি। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যাগত স্বল্পতা আমাদের কাজকে বাঁধাগ্রস্ত করে।” এই প্রেক্ষাপটে তারা প্রয়োজন হলে পুলিশের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা চাওয়ার কথাও জানান।
ভোটের দিন অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী ভোটারদের সহায়তায় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যবহারের সুপারিশ করেন এসপিরা।
বাজেট, যানবাহন ও জনবল বাড়ানোর দাবি
সুন্দর ও সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে পুলিশ সুপাররা বলেন, “বিগত নির্বাচনে পুলিশের বাজেট ছিল বৈষম্যমূলক। এবার সেই ভুল না করতে বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে।” পাশাপাশি প্রয়োজনীয় যানবাহন ও জনবল বরাদ্দ দেওয়ার আহ্বান জানান।
ডিসিদের উদ্বেগ ও সুপারিশ
সম্মেলনে জেলা প্রশাসকেরাও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তোলেন। তারা বলেন, “মাঠ পর্যায়ে এখনো যেসব বৈধ অস্ত্র রয়েছে, দ্রুত সেগুলো উদ্ধার করতে পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে।”
দূরবর্তী ও দুর্গম এলাকার ভোটকেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য হেলিকপ্টার সরবরাহের সুপারিশ করেন তারা। সেই সঙ্গে উল্লেখ করেন, “বিভিন্ন উপজেলায় গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেসব জায়গায় নতুন গাড়ির প্রয়োজন রয়েছে।”
ডিসিরা আরও বলেন, “এআই (AI) এবং অপতথ্য প্রচার নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে, এটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।”
তারা বলেন, “আমরা আইনের বাইরে কোনো কাজ করবো না। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য। তবে গণভোট বা প্রচার সময় কিছুটা বাড়ানো দরকার।” সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানোর ওপরও জোর দেন জেলা প্রশাসকরা।
এই সম্মেলনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষতা, নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে যেসব প্রস্তুতি দরকার, তার সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন।


