নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পর ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী (Mufti Monir Hossain Kasemi)। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড চৌরঙ্গী এলাকায় দলীয় সমর্থকদের সামনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, “আজ থেকে আমরা সবাই বুকে বুক মিলিয়ে ধানের শীষ ও খেজুরগাছ প্রতীক নিয়ে কাজ করব।”
তিনি আরও বলেন, “এটি একটি গণতান্ত্রিক দেশ। যে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন—এটা তার সাংবিধানিক অধিকার। তবে ইনশাআল্লাহ, ধানের শীষ ও খেজুরগাছের কাছে তারা টিকতে পারবে না।”
মুফতি কাসেমী এ সময় জানান, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনতে চান, যাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর নেতৃত্ব আরও দৃঢ় হয়।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) কাসেমীর নাম ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপি নিজে কোনো প্রার্থী দেবে না—এই আসনটি জোটের শরিক জমিয়তের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও একই আসনে ধানের শীষ প্রতীকে কাসেমী ছিলেন জোটের প্রার্থী। এবার নতুন বিধিমালার আওতায় তিনি নিজ দলের প্রতীক ‘খেজুরগাছ’ নিয়ে লড়াই করবেন।
মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী বর্তমানে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব এবং জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসার মুহতামিম। তিনি পূর্বে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের অর্থ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
তবে এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন আরও অনেকে। প্রার্থীতার জন্য আলোচনায় ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ব্যবসায়ী নেতা শাহ আলম, সাবেক সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী।
তাদের পাশাপাশি মনোনয়নের আশায় ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী এবং জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি।
মনোনয়ন না পেলেও শাহ আলম ও মোহাম্মদ আলী ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চলছে, তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।
এই পরিস্থিতিতে কাসেমীর ঐক্যের ডাক, ধানের শীষ ও খেজুরগাছ প্রতীককে সামনে রেখে জোটের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।


