জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) (National Citizen Party – NCP)–র জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সোমবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক বিস্তারিত পোস্টে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানান।
পোস্টে সামান্তা লেখেন, “মধ্যমপন্থায় পৌঁছানো কোনো সহজ বা তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়া নয়। পার্টির মাত্র ১০ মাসের যাত্রায় সাংগঠনিক মধ্যমপন্থার চূড়ান্ত রূপ নির্ধারণ সম্ভব নয়।” তিনি বলেন, এনসিপিতে ভিন্ন মতাদর্শ ও অভিজ্ঞতা থেকে আসা সদস্যদের নিয়ে মতবিনিময় ও অভ্যন্তরীণ বিতর্ক স্বাভাবিক।
নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) সঙ্গে এনসিপির নির্বাচনি জোট গঠনের সিদ্ধান্তকে উল্লেখ করেন সামান্তা। তাঁর ভাষায়, “আমি এ বিষয়ে আমার ভিন্নমত প্রকাশ করেছি। প্রত্যেকে নিজ নিজ রাজনৈতিক বোঝাপড়া ও বাস্তবতার আলোকে অবস্থান নিয়েছে; কোনটি সঠিক, তা সময়ই বলবে।”
তিনি আরও লিখেছেন, “আমি জোট গঠনের এই সিদ্ধান্তকে সঠিক মনে করি না। তবে এই মুহূর্তে পার্টি থেকেও পদত্যাগ করছি না। তবুও জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচন করা কিংবা তাঁদের কাছ থেকে কোনো ধরনের সহায়তা গ্রহণ করা আমার কাছে নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।”
সামান্তা স্পষ্ট করে জানান, এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এটি কোনো আদর্শিক জোট নয়। সে বিবেচনায় জামায়াতের রাজনীতির বিরোধিতা এনসিপির অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয় বলেই মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনি জোট গঠনের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মোড়। এর সঙ্গে এনসিপির ভবিষ্যৎ রাজনীতি যেমন জড়িত, তেমনি জড়িত আমার নিজের রাজনৈতিক অবস্থানও। আমি সময়ের অপেক্ষায় থাকব। আল্লাহ ভালো জানেন।”
সামান্তার এই ঘোষণার পর এনসিপির ভেতরের মতপার্থক্য আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মাত্র ১০ মাস বয়সী দলটির অভ্যন্তরীণ অবস্থান, জোট কৌশল এবং আদর্শিক মিশ্রতা সামনে চলার পথকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।


