ঠাকুরগাঁও-১: রিকশায় চড়ে মনোনয়ন জমা দিতে এলেন মির্জা ফখরুল, চাইলেন ‘শেষ সুযোগ’

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ব্যতিক্রমী এক চিত্র দেখা গেল ঠাকুরগাঁওয়ে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে কোনো রকম শোডাউন ছাড়াই সাধারণ এক রিকশায় চেপে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)। তিনি ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপি (BNP) প্রার্থী হিসেবে।

প্রার্থিতা দাখিলের আগে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় অংশ নেন মির্জা ফখরুল। সেখানে তিনি গত ১৫ বছরের ‘বিভাজনের রাজনীতি’ থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে আমরা অনেক তাজা প্রাণ হারিয়েছি একটি সুন্দর ও দুর্নীতিমুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য। আমরা সেই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে একটি উদারপন্থী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিক সমান মর্যাদায় বসবাস করবে।”

এরপর দুপুর ১২টায় তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ইশরাত ফারজানা-এর কার্যালয়ে যান মনোনয়নপত্র জমা দিতে। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এই নির্বাচনকে নিজের রাজনৈতিক জীবনের ‘শেষ নির্বাচন’ বলে ইঙ্গিত দেন ফখরুল। বলেন, “দীর্ঘদিন পর আমরা ভোটাধিকার ফিরে পেয়েছি। এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঠাকুরগাঁও ও দেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করার জন্য আমাকে শেষ সুযোগ দিন।”

মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে মির্জা ফখরুল নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করেন। তার সঙ্গে ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলীসহ শীর্ষ পাঁচজন নেতা। কোনো শোডাউন বা মিছিলের পরিবর্তে একেবারে সাধারণ মানুষের মতো রিকশায় চেপে গন্তব্যে পৌঁছানোর বিষয়টি স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

প্রার্থিতা দাখিলের সময় তার আচরণে একটি সুস্পষ্ট বার্তা স্পষ্ট—রাজনীতি মানেই জাঁকজমক নয়, জনগণের সঙ্গে সংযোগই মুখ্য। এমন একটি অবস্থানে দাঁড়িয়ে ফখরুলের এই ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নির্বাচনী মাঠে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলেই মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *