মাত্র ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও। তাও পুরোটা চোখ মেলে দেখার সাহস পাননি অনেকে। তরুণদের গুলি করে হত্যার পর ভ্যানে স্তূপ করা হয় লাশ। লাশের স্তূপে প্রাণ ছিল এমন মানুষও ছিল। এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে জনমনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কতোটা বর্বর আর নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছিল তার একটা প্রমাণ হিসেবে হাজির হয়েছে এই ভিডিও চিত্র। শুরুতে ভিডিওর স্থান নিয়ে জিজ্ঞাসা ছিল। তবে গতকাল সকালে নিশ্চিত হওয়া যায় এটি আশুলিয়া থানা এলাকার ঘটনা। ঘটনার বিষয়ে মানবজমিন বিস্তারিত অনুসন্ধান চালিয়ে সেদিনের বর্বরতার আরও অনেক তথ্য পেয়েছে। সেই দিনের ছাত্র-জনতার হত্যাকাণ্ডে আশুলিয়া থানা পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ছিল সেখানে।
তাদের গুলিতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নির্মম এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত পুলিশ সদস্যের অনেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কর্মস্থলে ছিলেন। ভিডিও প্রকাশের পর থেকে তারা আত্মগোপনে চলে যান। ইতিমধ্যে ঘটনায় জড়িত অনেক পুলিশ সদস্যের পরিচয়ও প্রকাশ পেয়েছে।
সরজমিন জানা গেছে, পুলিশের ভ্যানের লাশের স্তূপ করে রাখা মর্মান্তিক ঘটনাটি আশুলিয়া বাইপাইল এলাকার থানা রোডের গলিতে। থানার পাশেই ইসলাম পলিমারস অ্যান্ড প্লাস্টিসাইজারস লিমিটেডের অফিসার ফ্যামিলি কোয়ার্টারের দেয়াল ঘেঁষে গুলিবিদ্ধ ৭ শিক্ষার্থীর মরদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল। পুলিশ লাশগুলো একত্রিত করে ভ্যানের উপর স্তূপ করে রাখে। এরপরে ঘটে আরও মর্মান্তিক ঘটনা। যার ছবি বা ভিডিও চিত্র ছিল না।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী মানবজমিনকে বলেন, গত ৫ই আগস্ট দুপুরে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালানোর পরপর বাইপাইল এলাকায় বিজয় মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে বিকালে উত্তেজিত জনতা আশুলিয়া থানা ঘেরাও করে। এতে পুলিশ সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। থানার আশপাশে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা দৌড়ে থানা ভবনে ঢুকে পড়েন। ঢুকেই তারা থানার গেট বন্ধ করে দেন। তখন বিকাল সাড়ে ৪টা। মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে আন্দোলনকারীরা চারদিক থেকে থানা ঘিরে ফেলেন। তারা থানা ভবনে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। কেউ কেউ গেট ভাঙতে এগিয়ে যান। অবস্থা বেগতিক দেখে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ এফ এম সায়েদ পুলিশ সদস্যদের অস্ত্র রেডি করতে বলেন। গুলি লোড করতে বলেন। এই কথা শুনে উপস্থিত ছাত্র-জনতা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। আশপাশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় থানা ভবন থেকে বেরিয়ে এসে সশস্ত্র ৩০ থেকে ৩৫ জন পুলিশ সদস্য থানার গেটে অবস্থান নেন। তখন বিকাল ৪টা বেজে ৪০ মিনিট। প্রথমে ওসি সায়েদ গেইটে এসে উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন। তখন আন্দোলনকারীরা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। ছাত্র-জনতা পুলিশকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন। তখন ওসি এ এফ এম সায়েদ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা হেরেছি। আপনারা জিতেছেন। আমাদের মাফ করে দেন। সবাই বাড়ি ফিরে যান। একপর্যায়ে এস আই মালেক, ঢাকা উত্তর ডিবির ওসি তদন্ত আরাফাত হোসেন, এসআই মো. রকিবুল, এসআই আবুল হাসান, এসআই হামিদুর রহমান, এসআই নাসির উদ্দিন, এসআই আব্দুল মালেক, এএসআই সুমন চন্দ্র গাইন, এসআই জলিল ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়েন। গুলিতে থানার গলিতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। পুলিশের মুহুর্মুহু গুলিতে লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যান।
থানার সামনের ভবন থেকে পুরো ঘটনা দেখা রনি আহমেদ নামের এক ব্যক্তি মানবজমিনকে বলেন, বিকালে থানা ফটকের সামনে উত্তেজিত জনতার ওপর পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে ১০ থেকে ১২ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যান। কয়েক মিনিট ধরে ওখানে গোলাগুলি চলে। পরে জীবিত কয়েকজনকে ছাত্ররা নিচু হয়ে এসে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান। তারপরেও ৬ থেকে ৭ জন ওখানে পড়েছিল। তখন আশপাশের সব অলিগলি জনগণ ঘিরে ফেলে। রাস্তা থেকেও লোকজন থানার দিকে রওনা হয়। পরে থানা থেকে সব পুলিশ সশস্ত্র হয়ে একযোগে বেরিয়ে আসে। তারা গুলি করতে করতে বেরিয়ে আসে।
পলিমারস অফিসার ফ্যামিলি কোয়ার্টার গেটের অপর পাশে সাদিয়া রাজশাহী কনফেকশনারি অ্যান্ড মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক ফাহিমা আক্তার মানবজমিনকে বলেন, ঘটনাটি আমার দোকানের সামনেই ঘটেছে। ৫ই আগস্ট বিকাল সাড়ে ৪টা হবে। সেদিন গুলি খেয়ে থানার গলিতে পড়ে থাকা মরদেহগুলো ভ্যানে তুলছিলেন পুলিশ সদস্যরা। আমাদের চোখের সামনেই তুলেছে। প্রথমে লাশগুলো তুলে ব্যানার দিয়ে ঢেকে থানার সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। সেই ঘটনা এখনো চোখের সামনে ভাসে।
ওইদিন ঘটনাস্থলে থাকা রকি আহমেদ নামের এক পোশাক শ্রমিক মানবজমিনকে বলেন, পুলিশ প্রথমে গেটে এসেই ইসলাম পলিমারসের সামনে পড়ে থাকা গুলিবিদ্ধ ৭ জনকে একটি প্যাডেল ভ্যানে তুলেন। পরে তাদের থানার সামনে আনেন। লাশগুলো থানার পার্কিংয়ে থাকা পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে তুলে আগুন দেয়া হয়। ৭ জনের লাশ আগুনে পুড়িয়ে থানা থেকে সব পুলিশ বেরিয়ে গলি দিয়ে হাঁটতে শুরু করে। আর গুলি ছুড়তে থাকে। আগুনে পুড়ে যাওয়া একজনের হাতে তখনো হাতকড়া ছিল।
লাশের স্তূপ করা জায়গাটি হাত দিয়ে দেখিয়ে আসলাম হোসেন নামের এক ব্যক্তি মানবজমিনকে বলেন, ভিডিওতে যে পোস্টারটি দেখা যাচ্ছে। সেটা এখনো দেয়ালে অক্ষত আছে। কিছু বালুর বস্তা ছিল, সেগুলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেদিন পুরো থানা রোডেই লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। পুলিশ ভ্যান নিয়ে সব লাশ এক জায়গায় জড়ো করে। পরে লাশগুলো থানার সামনে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এই ঘটনা দেখেনি আশপাশে এমন কোনো মানুষ ছিল না। এ এক ভয়ানক ঘটনা। মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে।
আশুলিয়া থানার সামনে পুড়িয়ে দেয়া লাশের মধ্য জামগড়া শাহিন স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আস-সাবুরও ছিলেন। নিহত আস-সাবুরের বড় ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, আমার ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে থানার সামনে রাস্তায় পড়ে ছিল। পরে পুলিশ তার নিথর দেহ রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে পিকআপ ভ্যানে ঢুকিয়ে আগুন দিয়ে দেয়। ভাইটি আমার জীবিত ছিল নাকি মৃত সেটা জানার সুযোগও হয়নি। তারা কোনো সুযোগ দেয়নি। গুলিবিদ্ধ ৭ জনকেই আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়। কে জীবিত কে মৃত তাও পুলিশ দেখেনি। আমার ভাই নীল গেঞ্জি পরিহিত ছিল। আমরা গেঞ্জি দেখে পোড়া লাশ শনাক্ত করি।
আফজাল হোসেন নামের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সেদিন পুলিশ থানা থেকে বের হওয়ার সময় কারও কারও হাতে দুটি অস্ত্র ছিল। অনেকে সিভিল ড্রেসে ছিলেন। অনেকের হাতে অচেনা অস্ত্র দেখেছি। তারা গুলি করতে করতে বের হয়। কখনো গুলি বন্ধ করেনি। মেইন রোডে এসে একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দেয়। ওই পিকআপ ভ্যানেও ৫ থেকে ৬টি গুলিবিদ্ধ মরদেহ ছিল। বিকালে যারা গুলিতে মারা গেছে তাদের ওই ভ্যানেই রাখা হয়েছিল। তারা নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছিল। গুলি কখনো বন্ধ করেনি। অলিগলিতে, রাস্তায়, বাসাবাড়িতে যেখানে খুশি সেখানেই গুলি করেছে পুলিশ। তারা দলবদ্ধ ছিল। ১৩০ জনের বেশি হবে।
বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডের এক অটোরিকশা চালক মানবজমিনকে বলেন, পুলিশ থানা থেকে মেইন রোডে এসে হাতের ডান- বাম দু’পাশেই গুলি চালিয়েছে। রাস্তার দু’পাশে গুলি চালাতে চালাতে তারা নবীনগরের দিকে আগাতে থাকে। তখন মানুষ জীবন বাঁচাতে যে যার মতো দৌড়ে পালিয়েছে। এক মিনিটের জন্যও পুলিশ গুলি বন্ধ করেনি। যতক্ষণ হেঁটেছে ততক্ষণই তারা গুলি ছুড়েছে। রাস্তার দু’পাশে পথচারী, বাসাবাড়ি ও দোকানপাটের শত শত মানুষ ওইদিন গুলিবিদ্ধ হয়। এমন দিন কখনো দেখেনি বাইপাইলবাসী।
সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আরও কয়েকজন পথচারী মানবজমিনকে বলেন, পুলিশ থানা রোড থেকে গুলি করতে করতে সোহেল হাসপাতাল পর্যন্ত যায়। তখন গুলির শব্দ ছাড়া কিছুই শোনা যায়নি। চারদিকে মানুষের চিৎকার। বাঁচাও বাঁচাও। মনে হয়েছে যুদ্ধ লেগেছে। তখন মানুষ বাসাবাড়ি ছেড়েও পালাতে শুরু করেন। রাত তখন ৯টার বেশি বাজে। পুলিশ সামনের দিকে হেঁটে যাচ্ছিল। আর গুলি ছুড়ছিল। এভাবে তারা পল্লী বিদ্যুৎ পর্যন্ত চলে যায়। এই সময়ে শত শত মানুষ গুলি খেয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছি।
একটি সূত্র মানবজমিনকে জানান, ৫ই আগস্ট সন্ধ্যায় আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ এফ এম সায়েদ, ওসি ইনটেলিজেন্স মিজানুর রহমান মিজান, ওসি অপারেশন নির্মল কুমার দাস, ওসি তদন্ত মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের ৯০ থেকে ১৩০ জন সদস্য অস্ত্রসহ থানা থেকে বের হয়ে আসেন। বাইপাইলে পুলিশের নির্বিচারের গুলির খবর পেয়ে সাভার সেনানিবাস থেকে সেনাবাহিনীর একটি টহল টিম বাইপাইলের দিকে রওয়া হয়। পল্লী বিদ্যুৎ পার হলে তারাও পুলিশের গুলির মুখে পড়েন। এতে দুই সেনাসদস্য গুলিবিদ্ধ হন। পরে সেনাবাহিনীর একাধিক টিম এসে পুলিশের সকল সদস্যকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। পরে কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশ সদস্যদের আটক করে নেন। তখন সবার হাতের আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়। এরপর শত শত মানুষ পুলিশকে ঘিরে ফেলে। পুলিশের কাছে জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর কারণ জানতে চান। জনগণই বিচার করবে বলে পুলিশ সদস্যদের ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এরপর সেনাবাহিনী তাদের নিরস্ত্র করে আটক করে নিয়ে যান। সেদিন রাত ১০টার দিকে নবীনগর সেনানিবাসের গেটে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। পরে সেনাসদস্যরা জনতাকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন।
সেদিন অস্ত্র হাতে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন: প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অস্ত্র হাতে সাধারণ মানুষের উপর গুলি ছোড়েন ওসি তদন্ত মাসুদুর রহমান, এসআই মো. রকিবুল, এসআই আবুল হাসান, এসআই হামিদুর রহমান, এসআই নাসির উদ্দিন, এসআই আব্দুল মালেক, এসআই মো. আরাফাত উদ্দিন, এসআই অমিতাভ চৌধুরী, এসআই সোহেল মোল্লা, এসআই অপূর্ব সাহা, এসআই শরীফ আহম্মেদ, এসআই মো. বদিউজ্জামান, এসআই নোমান সিদ্দিক, এসআই মো. আউয়াল হোসেন, এসআই জোহার আলী, এসআই বিপুল হোসেন, এসআই মো. নুর আলম, এসআই আনোয়ার হোসেন, এসআই মো. সজীব হোসেন, এসআই মো. মোতালেব, এসআই মো. মোস্তফা কামাল, এসআই সিকদার হারুন অর রশিদ, এসআই শিব শংকর, এএসআই মনিরুল ইসলাম, এএসআই আব্দুল জলিল, এএসআই সুমন চন্দ্র গাইন, এএসআই কামরুল হাসান, এএসআই নুরুল ইসলাম, এএসআই আনোয়ার হোসেন, এএসআই ফিরোজ মিয়া সরকার, এএসআই মো. আলাউদ্দিন, এএসআই ইমারত হোসেন, এএসআই এনায়েত হোসেন, এএসআই সিরাজুল ইসলাম, এএসআই মিজানুর রহমান, এএসআই আমির হামজা, এএসআই বিশ্বজিৎ, এএসআই আনুয়ারুল মানার, এএসআই মো. নূর নবী, এএসআই মাসুদ রানা, এএসআই সাহাবুদ্দিন, নায়েক মাহাবুব হোসেনসহ আরও ১০১ জন কনস্টেবল।
সেদিন নিহতের স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫ই আগস্ট সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের গুলিতে অন্তত ৩১ জন নিহত হন। পরদিন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ১৫ জন মারা যান। এতে ওই ঘটনায় মোট নিহতের সংখ্যা ৪৬ জন। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতাল, আশুলিয়ার হাবিব ক্লিনিক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক হাসপাতাল, এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সাভারের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছেন প্রায় দেড় হাজারের বেশি মানুষ।
তদন্ত কমিটি গঠন: ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক বর্তমান ঢাকা উত্তর (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভেস্ট পরা যুবকটি আমাদের ঢাকা জেলা গোয়েন্দা বিভাগ উত্তরের পরিদর্শক আরাফাত হোসেন। তিনি বলেন, আরাফাত আমার সঙ্গে কাজ করে। আমি কেন তাকে চিনবো না। ওইটা আরাফাত। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে সে আরাফাত সহ আরও অনেকেই আশুলিয়া থানা পুলিশকে সাপোর্ট দিতে সেখানে যায়। সেদিন সকাল থেকেই আমরা ওখানে ছিলাম। তবে সেদিন ছাত্র-জনতার দিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়িনি। তিনি বলেন, আমরা সেদিন ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আব্দুল্লাহিল কাফীর নির্দেশনা পালন করেছি। ডিবি’র ওসি বলেন, আরাফাত ঘটনার পর নিয়মিত অফিসও করেছেন। দুই একদিন আগে তার বাবা অসুস্থ হওয়ায় তিনি ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরিশালে যান।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটির সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে আরও যাচাই-বাছাই করবেন। আমার বিশ্বাস শুধু আরাফাত নয় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের মধ্যদিয়ে সকল দোষীর নামই উঠে আসবে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই আমরা ছাড় দিবো না। বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।