আলু ও পেঁয়াজ রপ্তানির স্লট বুকিং বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। এতে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে।
সোমবার (২৬ নভেম্বর) সকাল থেকে নতুন করে পেঁয়াজ কিংবা আলুবাহী কোনো ট্রাক হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। তবে আগের বুকিং করা দুটি আলুবাহী ট্রাক এদিন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক নুর ইসলাম বলেন, ভারত থেকে পণ্য আমদানি করতে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের স্লট বুকিং নিতে হয়, যা অনলাইন সিস্টেম। হঠাৎ করে রোববার অনলাইন সিস্টেম বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানান ভারতের রপ্তানিকারকরা। ফলে স্লট বুকিং দিতে পারছেন না তারা। এজন্য পেঁয়াজ ও আলু আমদানিতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। তবে আগের বুকিং করা আলু এসেছে দুই ট্রাক। স্লট বুকিং খুলে না দিলে বুধবার (২৭ নভেম্বর) থেকে আলু ও পেঁয়াজ বন্দর দিয়ে আমদানি হবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতের একজন রপ্তানিকারক বলেন, আমরা বৈঠক করব সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে যাতে অন্য রাজ্য থেকে হলেও বাংলাদেশে আলু ও পেঁয়াজ রপ্তানি করতে পারি। এছাড়া আমাদের যেসব গাড়ি লোডিং অবস্থায় রয়েছে, সেগুলোর স্লট বুকিং না দিলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
সর্বশেষ রোববার (২৫ নভেম্বর) ১৪ ট্রাকে ৩৯৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ও ৭২ ট্রাকে ২ হাজার মেট্রিক টন আলু আমদানি হয়েছে এই বন্দর দিয়ে। এরপর রপ্তানিতে স্লট বুকিং বন্ধ করে দেয় দেশটির রাজ্য সরকার।
স্লট বুকিং বন্ধের ফলে শুধু হিলি স্থলবন্দর নয় পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত সব স্থলবন্দর দিয়ে এই পণ্য দুটি আমদানি বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য এর আগে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকনের ধর্মীয় গুরু চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার এবং তার জামিন নাকচ করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছে দিল্লি।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার ও তার জামিন নাকচের বিষয়টি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি। বাংলাদেশে ‘উগ্রপন্থীদের’ দ্বারা হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর একাধিক হামলার পর এমন ঘটনা ঘটলো। এছাড়া সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের পাশাপাশি মন্দির অপবিত্রতার ঘটনাও ঘটেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্ভাগ্যজনক যে, যখন এসব ঘটনায় অভিযুক্তরা অধরা রয়ে গেছে, তখন শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে ন্যায্য দাবি উপস্থাপনকারী একজন ধর্মীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করা উচিত নয়। আমরা শ্রী দাসের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদকারী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়টিও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে হিন্দু ও সকল সংখ্যালঘুদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই।