ভারতের উত্তর প্রদেশে মসজিদে জরিপকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত পাঁচ মুসলিম

ভারতের উত্তর প্রদেশের সাম্ভাল জেলার চান্দৌসি শহরের জামে মসজিদে জরিপ চালানো নিয়ে সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে ভারতের সংবাদপত্র দ্য হিন্দু। এছাড়া এই ঘটনায় ২০ জন পুলিশ সদস্য সহ আহত হয়েছে অনেকে।

সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ জনকে গ্রেপ্তারের খবর দিয়েছে এনডিটিভি। তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা লংঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সংঘর্ষের পর উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সাম্ভাল জেলায় ২৪ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে জেলা কর্তৃপক্ষ। শহরের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সোমবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সাম্ভাল শহরে বাইরের এলাকার মানুষের যাতায়াত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য মুঘল আমলে নির্মিত এই মসজিদটি একটি মন্দির ভেঙে করা হয়েছে বলে দাবি তুলে একদল হিন্দু ধর্মালম্বী। আর তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতেই আদালত মসজিদটি নিয়ে জরিপের আদেশ দিয়েছিল গত ১৯ নভেম্বর। ২৯ নভেম্বরের মধ্যে জরিপ করে প্রতিবেদন জমা দিতে আদেশ দেয় আদালত /

এদিকে রবিবার জরিপকারী দল স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের নিয়ে মসজিদ এলাকায় গেলে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় সংখ্যালঘু মুসলমানরা আর তাতেই বাধে সংঘর্ষ। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে সেখানে পাঁচজন নিহত হয় বলে খবরে প্রকাশ।

সংঘর্ষে নিহতদের সবাই মুসলমান। তাদের নাম- নাঈম, বিল্লাল, নোমান, মোহাম্মদ কাইফ ও আয়ান।

তবে মোরাদাবাদ রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল মুনিরাজ জি সোমবার সাংবাদিকদের বলেছেন, “গতরাতে আমরা তিনজন ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করলেও, আজ মোরাদাবাদে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট চার জনের মৃত্যু হয়েছে।”

এবিষয়ে সাম্ভালের লোকসভার সদস্য জিয়াউর রহমান বারখ বলেন, “বাইরে থেকে লোকজন এসে এখানে একটি উটকো মামলা করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছে।”

এবিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত এরই মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে যে ১৯৪৭ সালের আগের সব ধর্মীয় স্থাপনা যে অবস্থায় রয়েছে, সেই অবস্থায় থাকবে। চান্দৌসি জামে মসজিদের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য।

এই স্থাপনার ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি এখানে মুসলমানদের নিয়মিত নামাজ আদায়ের বিষয়টি তুলে ধরে জিয়াউর বলেন, “যদি জেলা আদালতে কাঙ্ক্ষিত আদেশ আমরা না পাই, তবে হাই কোর্টে যাব।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *