এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শেখ মিলির ঘনিষ্ঠ সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী সুমনা

সুমনা ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ: হত্যা মামলা থেকে জমি দখল পর্যন্ত

স্বৈরাচার সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামাতো বোন ও ধানমন্ডি থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মিলির ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সুমনা ইসলাম এখনও দাপটের সঙ্গে প্রকাশ্যে চলাফেরা করছেন। একজন হত্যার মামলার আসামি হয়েও তিনি কীভাবে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর প্রশ্ন উঠেছে।

রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের অপব্যবহার

সুমনা ইসলাম রাশিয়া ইউনিট ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং ধানমন্ডি মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য। রাজনৈতিক পরিচিতি ব্যবহার করে তিনি অনেক অপকর্মে লিপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অজ্ঞাত শক্তির প্রভাব তাকে আইন ও বিচারব্যবস্থার আওতার বাইরে রাখছে।

জানা গেছে, পলাতক এলজিইডির সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন, যদিও তার কোনো বৈধ আয় বা ব্যবসা নেই। অর্ধ কোটি টাকার গাড়ি ব্যবহার এবং বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে বসবাস তার বিতর্কিত অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।

হত্যা মামলা এবং সাংবাদিক হেনস্থার অভিযোগ

সুমনা ইসলামের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা এবং সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এর পাশাপাশি, সাংবাদিকদের হেনস্থা করার বিষয়েও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। ঢাকার সিএমএম আদালতে তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন এক সিনিয়র সাংবাদিক।

প্রতারণা ও অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ

তদন্তে জানা যায়, সুমনা ইসলামের বাড়ি পিরোজপুরের ইন্দুরকান্দি উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামে। তার পরিবার অর্থনৈতিক সংকটে পড়ার পর তিনি প্রতারণার পথে পা বাড়ান। অভিযোগ রয়েছে, বিয়ের ফাঁদে ফেলে তিনি বহু পুরুষের কাছ থেকে অর্থ ও সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছেন। সিলেটের এক সাবেক সংসদ সদস্যের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তিনি বিপুল পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করেছেন।

জমি দখল ও মাদ্রাসা ভাঙচুর

জমি দখল ও মাদ্রাসা ভাঙচুরের ঘটনাতেও সুমনা ইসলামের নাম জড়িত। পিরোজপুরের জিয়ানগরে মাদ্রাসার দুটি ভবন ভেঙে জমি দখল করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মাদ্রাসার পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন যে, সুমনা ইসলাম ও তার সহযোগীরা দুই শতাধিক লোক নিয়ে মাদ্রাসার ভবন ধ্বংস করে এবং জমি দখল করে নেয়।

ভবিষ্যৎ প্রেক্ষাপট

সুমনা ইসলামের বিরুদ্ধে আনা এসব গুরুতর অভিযোগ আইন ও সমাজব্যবস্থার প্রতি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। হত্যা মামলা থেকে শুরু করে জমি দখল এবং অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ পর্যন্ত তার কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও নিন্দার জন্ম দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচারব্যবস্থার এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *