বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খালেদ হাসানকে গত শুক্রবার থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও তার কোনো যোগাযোগ নেই বলে জানা গেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তিনি তার বন্ধু ওমর ফারুকের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এবং আশপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরি করেন। পরের দিন শুক্রবার ভোর ৫টায় তিনি পূর্বাচল জলসিঁড়ি আবাসিক এলাকায় অনুষ্ঠিত ২১ কিলোমিটার ম্যারাথনে অংশ নেন। ম্যারাথন শেষে তিনি বন্ধুকে ফার্মগেট এলাকায় নামিয়ে দিয়ে সকাল ১০টা ৪৩ মিনিটে মোটরসাইকেল চালিয়ে নিজের কক্ষে ফিরে আসেন। হলে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তা দেখা গেছে। তার মোটরসাইকেলটি এখনো হলে অবস্থান করছে।
খালেদের ফোন কল রেকর্ড (সিডিআর) পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি সর্বশেষ ২০ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে ঢাকার বাইরে অবস্থানরত এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেন। তার রুমের দরজাটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। বন্ধুরা পাশের কক্ষের চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে তার ব্যবহৃত একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন উদ্ধার করেন। একই দিন বেলা ৩টার দিকে জিহাদ নামের একজন তাকে ক্যাম্পাসে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত জানান, সহ-সমন্বয়ক খালেদ হাসান নিখোঁজ হওয়ায় তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তিনি উল্লেখ করেন, আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে খালেদ বিভিন্ন সময় হুমকির মুখে পড়েছিলেন। নুসরাত খালেদের সন্ধানে সবাইকে তাদের অবস্থান থেকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এবং কোনো তথ্য পেলে তা জানানোর অনুরোধ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে লিখেছেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সাহসী কর্মী খালেদ হাসান গত ২৪ ঘণ্টা ধরে নিখোঁজ। তার নিরাপত্তা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
তিনি আরও জানান, বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে এবং তারা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সাদিক কায়েম আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন, “আল্লাহ যেন খালেদকে সুস্থভাবে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন।”