সেই পিরোজপুরের বাস রিকুইজিশন নিয়ে যা বললেন প্রেস সচিব

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) (NCP) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য পিরোজপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচটি বাস রিকুইজিশন করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি দাবি করেন, এতে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। তবে এটি কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়—শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো ঘটনা ঘটেছে।

বাস রিকুইজিশনের প্রেক্ষাপট

পিরোজপুর শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং নাগরিক কমিটি কর্তৃক আহত ও নিহত পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে জেলা প্রশাসন বাস রিকুইজিশনে সহায়তা করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বাসগুলোর জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি -তে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন।

জেলা প্রশাসকের বক্তব্য

প্রেস সচিব জানান, পিরোজপুরের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনায় জানা গেছে যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং নাগরিক কমিটি তাদের কাছে বাস রিকুইজিশনের জন্য আবেদন জানিয়েছিল। বিশেষ করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জেলা প্রশাসনের কাছে সহায়তার অনুরোধ করেন। প্রশাসন সেই অনুরোধের ভিত্তিতে পাঁচটি বাস রিকুইজিশন করলেও বাসগুলোর জ্বালানি ও অন্যান্য খরচ বহন করেনি।

সরকারের অবস্থান

প্রেস সচিব জানান, এই বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এর সাথেও আলোচনা হয়েছে। সরকার দাবি করছে, অন্তর্বর্তী প্রশাসন সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করছে, যাতে স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। সরকার কোনো নির্দিষ্ট দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তবে এই বক্তব্য সবাই মেনে নিচ্ছে না, বরং অনেকেই মনে করছেন এটি ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার’ চেষ্টা।

সয়াবিন তেলের সংকট প্রসঙ্গে

এ সময় সয়াবিন তেলের সংকট প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব জানান, সরকার সার্বক্ষণিক সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি জানান, বর্তমানে খোলা সয়াবিন তেলের দাম কিছুটা হ্রাস পেয়েছে এবং সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাজার স্থিতিশীল হবে। তবে বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজারে অনুপস্থিত বলে অভিযোগ রয়েছে এবং সরকার তা সমাধানে কাজ করছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সরকারের অগ্রাধিকার

প্রেস সচিব উল্লেখ করেন, ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বন্যার কারণে সরকারের মনোযোগ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীভূত ছিল। পরপর ছয়টি বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে, যা খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহে প্রভাব ফেলেছে। অক্টোবর থেকে সরকার বিশেষভাবে রমজানকে সামনে রেখে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা করছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *