জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party) বা এনসিপির বর্তমান অবস্থান, নেতৃত্বের বাস্তবতা এবং সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া নিয়ে খোলামেলা মন্তব্য করলেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন। সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে অংশগ্রহণ করে তিনি জানান, দলটি এখন আর কেবল ছাত্র রাজনীতির একটি ব্যানার নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক সত্তা হিসেবেই আত্মপ্রকাশ করেছে।
“এই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমরা নানান বাস্তবতার ভেতর দিয়ে গেছি। প্রথমে এটি ছিল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার মাত্র। এরপর ধাপে ধাপে গুছিয়ে এনেছি, আর এখন আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি হিসেবে দাঁড়িয়েছি,” বলেন তিনি।
তিনি আরও জানান, “এই জায়গা থেকে এখানে আসলে শুধুমাত্র ছাত্র, যারা একদম ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে আসা নেতৃত্বও আছে। আমি যদি বলি, আমাদের সময় যারা ২০১৮ সাল থেকে ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত এবং নানান ধরনের এক্টিভিজমের সাথে যুক্ত, তারাও এখানে আছেন। সুতরাং এই জায়গা থেকে যেহেতু নেতৃত্ব অনেক ক্ষেত্রে বাস্তবতা, সেটা হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে অনেক ধরনের কাজকর্ম হয়ে গেছে বা ইম্যাচিউরিটি ছিল। সেই জায়গা থেকে আমরা এক্সপেক্ট করি গঠনমূলক সমালোচনা অবশ্যই।”
‘সমালোচনা গ্রহণে আমরা প্রস্তুত’
সমালোচনাকে ইতিবাচকভাবে নেয়ার ব্যাপারে মনিরা বলেন, “আমরা সমালোচনাগুলোকে খুব স্বাভাবিকভাবেই নেই। এটা তো বলতেই পারতাম না গত ১৬–১৭ বছর। আপনি আজ যে প্রশ্ন করছেন, সেটাও একসময় বলা যেত না। এখন এসব প্রশ্ন আমরা স্বাগত জানাই।”
টকশোতে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এনসিপি প্রতিদিনই নিজেদের সংশোধনের চেষ্টা করছে। “আমরা প্রতিদিন শিখছি, নিজেরা নিজেকে ঠিক করার চেষ্টা করছি। এমনকি অন্য রাজনৈতিক দল থেকেও শেখার চেষ্টা করছি।”
‘জনগণ আমাদের সুযোগ দিয়েছে’
পাবলিক ফিডব্যাক প্রসঙ্গে মনিরা শারমিন বলেন, “ঈদের সময় আমরা প্রত্যেকে আমাদের নিজ নিজ জেলায় গিয়েছি। সেখানকার মানুষজন আমাদের বলেছেন, ‘তোমরা এটা করো না, ওটা করো।’ অর্থাৎ মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে বা নেতিবাচকতা খুব বেশি দেখি নাই। বরং বেশি বেশি ওয়েলকামিং অভিজ্ঞতাই হয়েছে।”
তবে পুরো অভিজ্ঞতা যে শুধুই ইতিবাচক ছিল, এমন নয়। মনিরা বলেন, “আমরা অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছি। কেউ কেউ মারমুখী অবস্থারও সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু পাশাপাশি একটা সিম্প্যাথির জায়গাও ছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে।”
এই সহানুভূতির জায়গাকে ‘এক্সপ্লয়েট’ না করে বরং শক্তি হিসেবে কাজে লাগাতে চায় এনসিপি— এমনটাই মনিরার বার্তা। তিনি জানান, “আমরা সেই জনসম্পৃক্ততাকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।”