দীপু মনির জন্য প্যারোলে মুক্তির আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে

জুলাই গণহত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনি (Dr. Dipu Moni) প্যারোলে মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন করলেও, তা গ্রহণ না করে আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার বলেই উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (International Crimes Tribunal)। আদালত জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি প্যারোল সংক্রান্ত আবেদনে সাড়া না দেয়, তাহলে পরে ট্রাইব্যুনাল বিষয়টি বিবেচনায় নেবে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। অপর দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

ডা. দীপু মনির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সিফাত মাহমুদ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আবুল হাসান, অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন এবং অ্যাডভোকেট মাহমুদুর রহমান রুবেল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম (Muhammad Tazul Islam) এবং প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার।

আবেদনের শুনানিতে ব্যারিস্টার সিফাত জানান, “আমাদের মক্কেল সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির স্বামী তৌফিক নেওয়াজ গুরুতর অসুস্থ। তিনি বর্তমানে রাজধানীর গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাই স্ত্রী হিসেবে তাঁর পাশে থাকার জন্য প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হয়েছে।”

তবে আদালত প্রশ্ন তোলে, “আপনারা মন্ত্রণালয়ে না গিয়ে আদালতে কেন এলেন?” জবাবে সিফাত মাহমুদ বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ইনহেরেন্ট ক্ষমতা রয়েছে। তাছাড়া আদালতের আদেশ থাকলে, আমরা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে পারি।”

এই পর্যায়ে প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান বলেন, “আবেদন মন্ত্রণালয়ে নয়, বরং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেই করতে হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী প্যারোল দেয়ার প্রক্রিয়া নির্ধারিত আছে।”

আদালত তখন জানায়, তারা আদেশ দিতে প্রস্তুত এবং প্যারোল বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষ।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “এই ধরণের আবেদন করে আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করা হচ্ছে। এতে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।”

ফলে আদালত পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, প্যারোলের সিদ্ধান্ত প্রশাসনিক স্তরেই হবে, এবং প্রাথমিকভাবে আবেদন পাঠাতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে—না হলে পরে ট্রাইব্যুনাল হস্তক্ষেপ করবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *