নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডের কালির বাজার মোড়ে শুক্রবার ভোরে ঘটে গেল উত্তপ্ত এক ঘটনা। ভোর পৌনে ছয়টার দিকে পুলিশ সেলিনা হায়াৎ আইভী (Selina Hayat Ivy) কে তার দেওভোগের নতুন বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময়, তাঁর গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, আইভীকে বহনকারী র্যাব ও পুলিশের ১৫টি গাড়ির বহর যখন জেলা গোয়েন্দা কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিল, তখন ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি দল তাদের ওপর ইটপাটকেল ছোঁড়ে এবং এক পর্যায়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হন। আহতদের তাৎক্ষণিক নাম-পরিচয় জানা যায়নি। হামলার পর সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা শহরের দেওভোগ এলাকায় আইভীর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। দীর্ঘ ছয় ঘণ্টার টানটান উত্তেজনার পর শুক্রবার ভোরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাড়ির সামনে তখন বিপুলসংখ্যক আইভী সমর্থক অবস্থান করছিলেন, যারা সারা রাত জেগে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান (Md. Hasinuzzaman) বলেন, “সেলিনা হায়াৎকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে এবং বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। তবে সৌভাগ্যক্রমে আইভী সম্পূর্ণ নিরাপদ আছেন।”
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেলিনা হায়াৎ আইভী-র বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যাচেষ্টা সহ মোট পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান জানান, আইভীর বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা রয়েছে এবং গ্রেপ্তারের সময় তিনি দিনের আলো ফুটে ওঠার অপেক্ষা করতে বলেন, এরপর তিনি পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করেন।
নারায়ণগঞ্জে সাবেক এই মেয়রের গ্রেপ্তারের পর পুরো শহরে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আইভীর গ্রেপ্তার এবং পুলিশী অভিযানের নেপথ্যে থাকা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এখন আরও ঘনীভূত হচ্ছে।