কেউ রাজপথ ছাড়বেন না, ঢাকাবাসী রাজপথে নেমে আসুন: হাসনাত আব্দুল্লাহ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগের (Awami League) কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত জানালেও শাহবাগে অবস্থানরত ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য (Anti-Fascist Student Unity) আন্দোলন থামায়নি। তাদের দাবি, দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং প্রতীক্ষিত জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

শনিবার (১০ মে) রাত ১টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে সরেজমিনে দেখা যায়, এনসিপি (National Citizen Party), ইনকিলাব মঞ্চ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাস্তায় বসে স্লোগান দিচ্ছেন। শত শত ছাত্র-জনতা অটল থেকে শাহবাগের রাজপথ দখলে রেখেছেন।

নেতাকর্মীরা বলছেন, “আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং জুলাই সনদ প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কোনো অবস্থান ছাড়বো না।” একইসঙ্গে তারা জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবেন হাসনাত আব্দুল্লাহ (Hasnat Abdullah), এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল)।

এর আগে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ছাত্র-জনতার তিন দফা দাবি— আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করতে হবে এবং জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে। তিনি বলেন, “এই তিন দফার একটি বাকি থাকলেও ছাত্র জনতা রাজপথ ছাড়বে না। আমরা পাঁচ অগাস্টের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে এসেছি। কোনো ষড়যন্ত্র আমাদের দমাতে পারবে না।”

পরে আরেকটি পোস্টে হাসনাত জানান, “আপনারা কেউ রাজপথ ছাড়বেন না। সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের আনুষ্ঠানিক মতামত আসা পর্যন্ত অবস্থান ত্যাগ করা যাবে না।”

শনিবার রাতে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে একটি মিনি ট্রাকে তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “আমাদের তিন দফা দাবির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ছাড়া আমরা রাজপথ ছাড়বো না। ঢাকাবাসীকে আহ্বান জানাই রাজপথে নেমে আসার জন্য।”

জুলাই ঐকের নেতা মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, “শুধুমাত্র কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে আমাদের থামানো যাবে না। আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষিদ্ধকরণ নিশ্চিত করতে হবে।”

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, “যতক্ষণ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসছে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।” আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচির দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র ৩০ দিনের মধ্যে দিতে হবে, নইলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”

এ সময় বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক রিফাত রশীদ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা ইসহাকও। তাদের বক্তব্যে একটিই সুর—আন্দোলন থেকে এক ইঞ্চিও পিছপা হবেন না আন্দোলনকারীরা।

রাজপথে অটল আন্দোলনকারীদের এই দৃপ্ত ঘোষণায় রাজধানীতে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। সামনের দিনগুলোতে রাজনৈতিক অঙ্গনে এই আন্দোলনের কী প্রভাব পড়ে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *