“গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতিকে উপেক্ষা করায় দেশ অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছে”: খসরু

দেশ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী (Amir Khosru Mahmud Chowdhury)। সোমবার (১৯ মে) রাজধানীর গুলশানে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘নীতি সংস্কার ও আগামীর জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এই মন্তব্য করেন।

আমির খসরু বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতিকে উপেক্ষা করছে। তারা নির্বাচনের বাইরে সব কিছু করছে, অথচ এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে—দেশে কবে নির্বাচন হবে, এরপর কী হবে, সরকার কতদিন থাকবে—এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। ফলে দেশ অনিশ্চয়তার গহ্বরে ঢুকে পড়েছে।”

প্রশ্নবিদ্ধ জিডিপি ও বাজেট নিয়ে ক্ষোভ

জাতীয় বাজেটকে কেন্দ্র করে দেওয়া বক্তব্যে খসরু বলেন, “বাজেট একটি প্রশ্নবিদ্ধ জিডিপির ওপর ভিত্তি করে তৈরি হচ্ছে। এটি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বাজেটেরই ধারাবাহিকতা। এখানে অর্থনৈতিক বাস্তবতা, বৈশ্বিক সংকট বা দেশের সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটের প্রতিফলন নেই।”

তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে বাজেট বা অর্থনৈতিক নীতিমালায় যা কিছু প্রস্তাব হচ্ছে, তা কার্যকর নয়। কারণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক কাঠামো ছাড়া কোনো অর্থনৈতিক কৌশলই টিকবে না।”

মানবিক করিডর ও নিয়ন্ত্রণনীতি নিয়েও সমালোচনা

মিয়ানমার (Myanmar)–সংক্রান্ত মানবিক করিডরের বিষয়টি নিয়ে খসরু বলেন, “এটি একটি স্পর্শকাতর ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। অথচ কোনো জাতীয় আলোচনা ছাড়াই অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। জনগণের প্রতিনিধিত্বহীন অবস্থায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতা।”

বাংলাদেশে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণের সংস্কৃতিকে উল্লেখ করে আমির খসরু বলেন, “এ দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ এতটাই বেশি যে, সেটিই লুটপাটের অন্যতম পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যত বেশি নিয়ন্ত্রণ, তত বেশি দুর্নীতি—এ বাস্তবতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।”

সম্মানিত অতিথিদের অংশগ্রহণ

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী (Anisuzzaman Chowdhury)। সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (CPD)-এর সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য (Debapriya Bhattacharya)। এ ছাড়া বেসরকারি, অর্থনৈতিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, গবেষক ও মিডিয়া ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *