জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সহ বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অব্যাহতির দাবি বিএনপির: সরকারকে ‘ভাবমূর্তি রক্ষার’ আহ্বান

অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি (BNP) বলেছে, সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে কিছু বিতর্কিত ব্যক্তির অবস্থান পুরো ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। গুলশানে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলটি এই উপদেষ্টাদের অব্যাহতির জোর দাবি জানিয়েছে। বিশেষভাবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সাম্প্রতিক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিএনপি বলেছে, তিনি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন এবং তাই তাকেও অব্যাহতি দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন (Dr. Khandaker Mosharraf Hossain) লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, “যেসব উপদেষ্টা একটি নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত, তাদের উপদেষ্টা পরিষদে রাখা সরকারের নির্দলীয় অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাই সরকারের স্বার্থেই তাদের অব্যাহতি দেওয়া জরুরি।”

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়েও বিএনপির কড়া আপত্তি। মোশাররফ বলেন, “গতকালকের বক্তব্য আবারও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তাই তাকেও অব্যাহতি দিতে হবে।”

তিনি আরও দাবি করেন, “ফ্যাসিবাদের দোসর” কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে বিএনপি আগেও বারবার সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে। তাঁর মতে, এই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ কেবল একটি নির্বাচন আয়োজন করা—তাই বড় পরিসরের উপদেষ্টা পরিষদের কোনো প্রয়োজন নেই, বরং দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ছোট পরিসরের উপদেষ্টা পরিষদই যথেষ্ট।

যদিও সংবাদ সম্মেলনে সরাসরি কোনো উপদেষ্টার নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে চলতি সপ্তাহের শুরুতে কাকরাইল মোড়ে আন্দোলনরত বিএনপি কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে দলটির নেতা ইশরাক হোসেন (Ishraque Hossain) স্পষ্টভাবে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন—তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম (Mahfuz Alam) এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া (Asif Mahmud Sajib Bhuiyan)।

ইশরাক হোসেন বলেন, “এই উপদেষ্টা পরিষদ বহাল থাকা অবস্থায় সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও সঠিক নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। তাই এটাকে পরিবর্তন করতে হবে।”

বিএনপির এই অবস্থান ইঙ্গিত করে, দলটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাঠামোতে ‘নিরপেক্ষতা ও আস্থার সংকট’ দেখছে এবং পরবর্তী নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক পরিবেশ কতটা অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছে, তারও একটি প্রতিফলন এটি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *