ডিসেম্বরেই নির্বাচন সম্ভব, পিছিয়ে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই—সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ (Salahuddin Ahmed) জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বরে অনুষ্ঠানের পথে কোনো বাস্তব সংকট নেই। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “নির্বাচন ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার একটি কারণও নেই।” সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সর্বদলীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।

বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)। সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি, সংবিধান ব্যতীত অন্যান্য সব সংস্কার এক মাসের মধ্যেই নির্বাহী আদেশ বা অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে আর দেরির কোনো অবকাশ নেই।”

বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার এক মাসেই সম্ভব

বিএনপি নেতার মতে, নির্বাচনমুখী সংস্কারের জন্য সময়ক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই। “যেসব সংস্কার জরুরি, সেগুলো চিহ্নিত করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যদি আমরা এখনই বাস্তবায়ন শুরু করি, তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন করা একেবারেই সম্ভব। আমাদের আলোচনা ছিলো গঠনমূলক, আমরা তিন দিন ধরে সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং লিখিত মতামত দিয়েছি।”

তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি ঐক্যমত গড়ে তুলতে চাই যা জাতীয় নীতিতে রূপান্তরিত হতে পারে এবং একটি শক্তিশালী, ভারসাম্যপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে সহায়ক হবে।”

প্রধান উপদেষ্টার প্রতি নিরপেক্ষতার প্রত্যাশা

বৈঠকে বিএনপি ছাড়াও অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দেয়। সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা আশা করি প্রধান উপদেষ্টা এই ব্যাপারটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন এবং নিরপেক্ষতার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করবেন। জাতি তার কাছে নিরপেক্ষতা প্রত্যাশা করে, কারো প্রতি রাগ, অভিমান বা পক্ষপাতের সুযোগ এখানে নেই।”

ঐক্যমতে পৌঁছানো সম্ভব

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “আমাদের কাছে মনে হয়েছে, সংশোধনী নিয়ে আলোচনা যে আন্তরিকতার সঙ্গে হয়েছে, তাতে আগামী এক মাসের মধ্যে একটি কার্যকর ঐক্যমতে পৌঁছানো সম্ভব। সব বিষয়ে সবাই একমত হবে এমনটা আমরা আশাও করি না, তবে যেসব বিষয়ে একমত হওয়া যাবে, তা পরবর্তী সংসদে সংশোধনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যাবে।”

তিনি আরও জানান, ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে জাতিকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া যেতে পারে, যা নির্বাচনী ইশতেহারেও স্থান পাবে।

সময় নষ্ট না করে দ্রুত সিদ্ধান্ত চায় বিএনপি

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “এর মধ্যেই অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। এখন আর সময়ক্ষেপণ চলবে না। আমরা আশা করি, এই মাসের মধ্যেই সব মতামত কম্পাইল করে একটি সুসংহত প্রস্তাব আকারে জাতির সামনে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে।”

এদিনের বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা তাঁদের নিজ নিজ দলের মতামত তুলে ধরেন এবং কমিশনের কাছে প্রস্তাবনা দেন। আলোচনার সারাংশ থেকে বোঝা যায়, অনেকাংশেই দলগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের জায়গা তৈরি হয়েছে, যার ভিত্তিতে সামনে এগোনো এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *