সিলেটের গোয়াইনঘাটের পর্যটন এলাকা জাফলং (Jaflong) পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে দেওয়া বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগে পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
রোববার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমের সই করা এক চিঠিতে তাকে এই শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে বলা হয়, “ছাত্রদলের দায়িত্বশীল পদে থেকে আপনি সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। কেন আপনার বিরুদ্ধে স্থায়ী সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে হবে।” তাকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের উপস্থিতিতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
এই ঘটনা ঘিরে ছাত্রদলের ভেতরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে যখন কেন্দ্রীয় কমিটি নিজের নেতাকেই প্রকাশ্যে শোকজ করল। এর আগে গতকাল শনিবার (১৪ জুন) সকালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (Syeda Rizwana Hasan) ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান (Muhammad Faozul Kabir Khan) জাফলং এলাকা পরিদর্শনে যান।
তাঁরা ফেরার পথে বল্লাঘাট এলাকায় একদল বালু-পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ী তাঁদের গাড়িবহর আটকে দেন। তারা বন্ধ থাকা জাফলংসহ সিলেট অঞ্চলের সব পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে স্লোগান দেন। ঘটনাস্থল থেকে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন আজির উদ্দিন ছাড়াও ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের একাধিক নেতা।
উপস্থিত ছিলেন পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সুমন শিকদার, জেলা ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুল জলিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রমজান মোল্লা এবং সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খান।
স্থানীয়দের মতে, এই বিক্ষোভ ছিল সম্পূর্ণ স্থানীয় দাবিনির্ভর, তবে ছাত্রদল নেতাদের সরাসরি অংশগ্রহণ রাজনৈতিক প্রশ্ন তুলেছে। দলের ভেতরে এখন দ্বিধা দেখা দিয়েছে—এই বিক্ষোভ কি সংগঠনগতভাবে অনুমোদিত ছিল, নাকি ব্যক্তিগত ও আঞ্চলিক স্বার্থের বহিঃপ্রকাশ?
যদিও ছাত্রদল থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বাকি নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, আজির উদ্দিনের শোকজকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়ছে।