বৈষম্যবিরোধীদের বাধায় ঝালকাঠিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের জুলাই পদযাত্রা-সমাবেশ পন্ড

ঝালকাঠিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়াল জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens’ Party – NCP) এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্য দিয়ে। আজ রোববার (জুলাই ১৩) বিকেলে এনসিপির ঘোষিত পদযাত্রা ও সমাবেশ বৈষম্যবিরোধী কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে স্থগিত হয়ে যায়।

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজাপুর উপজেলা থেকে ঝালকাঠিতে প্রবেশের সময় প্রথম বাধার মুখে পড়ে এনসিপির নেতারা। শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড়ে সমাবেশ করার কথা থাকলেও, শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে তাদের গাড়িবহর ঘিরে ধরে এবং ‘আওয়ামী প্রভাবিত এনসিপি চাই না’—এমন নানা স্লোগান দিতে থাকে। প্রায় আধঘণ্টা অবরোধ চলার পর তা প্রত্যাহার করা হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।

শেষ পর্যন্ত শহরের ইসলামী ব্যাংকের মোড় এলাকায় সংক্ষিপ্ত একটি সমাবেশ করে কেন্দ্রীয় নেতারা এলাকা ত্যাগ করেন। তবে ঝালকাঠি ছাড়ার সময়ও এনসিপি নেতারা ফের প্রতিবাদের মুখে পড়েন।

জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক মাহিনুল ইসলাম মান্না জানান, “শিক্ষার্থীদের বাধায় আমরা স্বাভাবিক কর্মসূচি পালন করতে পারিনি। দুই জায়গায় বাধা দেওয়া হয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় নেতারা সংক্ষিপ্তভাবে কর্মসূচি সেরে চলে গেছেন।”

অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে রাত সোয়া ৮টার দিকে ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অভিযোগ করা হয়, জেলা এনসিপি কমিটিতে আওয়ামী লীগ ঘরানার লোকজনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ছাত্রদের আরও অভিযোগ, এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, যুগ্ম আহ্বায়ক মাইশা মেহজাবীন এবং সহমুখপাত্র অনামিকা দত্ত বৃষ্টি।

তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট, তারা এনসিপিকে ছাত্র আন্দোলনের নামে “আওয়ামী প্রভাবিত একটি প্রকল্প” বলে মনে করছেন এবং তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিচ্ছেন।

এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এনসিপির জেলা নেতা মাহিনুল ইসলাম মান্না বলেন, “এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। আন্দোলনে যুক্তদের সঙ্গে কমিটি গঠনের আগে-পরে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। সারাদেশে যদি আওয়ামী লীগ না থাকে, তাহলে কমিটিতে তারা থাকবে কীভাবে?”

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, জাতীয় পর্যায়ে সক্রিয় হতে চাওয়া ছোট দলগুলোর অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত বিরোধ নতুন রূপ নিচ্ছে—যেখানে রাজপথ এখন আর শুধু প্রচার নয়, প্রতিরোধের মঞ্চেও পরিণত হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *